পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭

দেশে বন্য এবং আমার দু'চারটি কথা


ইদ আসছে। উত্ত রাঞ্চলে বন্যা চলছে। বন্যাতে সাধারণ মানুষ কে যে যেভাবে পারছে সাহায্য করছে। যারা সাহায্য করছেন তারা কেউ ঢাক ডোল পিটিয়ে করছেন না। তারা অনেকটা নিরবে স্বেচ্ছা সেবকদের/সংগঠনদের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। অনেক তরুন এবং যুবকদের দেখলাম রাস্তায় বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য টাকা তুলেছেন।
যা বর্তমান ক্ষয়িষ্ণু সমাজের জন্য আশার আলো। এরা সবাই মধ্যবিত্ত শ্রেণির সন্তান। কেউ কেউ কলেজ ভার্সিটি পড়ুয়া। এই শ্রেণির মানুষেরা না খেয়ে মরে থাকলেও কারো কাছে হাত পাতে না। অথচ চেনা নাই জানা নাই দূর দেশের বন্যার্তদের জন্য রাস্তায়, মসজিদে কিংবা মাকেটে ভিক্ষা করছে। এই ভিক্ষালব্ধ টাকা প্রকৃত অসহায় মানুষদের নিকট পৌছিয়ে দিচ্ছে।
মিডিয়ার উচিৎ ছিল এই সমস্ত ছেলে মেয়েদের কর্মকান্ড কে হাইলাইট করে প্রচার করা। যাতে অন্যরা দান করতে উৎসাহিত হন। এবং ছেলে-মেয়েরা  ভালো কাজের সামাজিক স্বীকৃতি লাভে একধাপ এগিয়ে যান।  

সরকার এ সমস্ত ছেলে-মেয়ে/সংগঠন কে বিভিন্ন পুরুস্কার দিতে পারেন। তারা (সরকার) সেটি করবে না বলে মনে হয়। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো বছর শেষে দেখতে পারব কোন না কোন চাটুকদার/দলবাজ একুশে কিংবা স্বাধীনতা পদক পেয়ে দাঁত কেলিয়ে মিডিয়াতে হাসছেন। অথচ এই সমস্ত চাটুকারেরা দেশ এবং গরীবের জন্য কোন দিন কিছু  করেছে বলে মনে পড়বে না।

সরকার জনগণের টাকা জনগণ কে বিপদের সময় বিলিয়ে দিতে নানা রকম ফন্দি ফিকির আঁটছে। রিলিফের নামে তাদের কে ঘন্টার পর ঘণ্ট লাইনে দাড় করিয়ে রাখছে, কখন নেতা আসবে,  আর মিডিয়াতে সেগুলো কখন হাইলাইট  করে প্রচার হবে। সেদিন পত্রিকায় দেখলাম দলীয় বিবেচনায় ত্রান দেয়া হচ্ছে! এর চেয়ে নিকৃষ্ট কাজ আর কি হতে পারে।

এদেশে কিছু শুশিল সমাজ নামক পরগাছা, বিদেশী ভিক্ষাবৃত্তি উপর নির্ভশীল কিছু এনজিও, ধর্মীয় লেবাসধারী কিছু সংগঠন, নারীবাদী নামক কূটনি বুড়ি - যারা পান থেকে চুল খসলে ট্যাও ট্যাও, ম্যাও ম্যাও করে  তারা কি বন্যাদুর্গতের মাঝে এমন কিছু করেছে যা উল্লেখ করা যায়?  এরা মুখে, হাতে, পায়ে বন্ধনী এবং কুলুপ এঁটে/পড়ে রয়েছে, কারণ বিশ্বে যত মারাত্মক প্রকৃতির বিপর্যয় বা জলবায়ু বিপর্যয়  ঘটে এর অধিকাংশের জন্য দায়ী আমেরিকা, ভারত, চীন, রাশিয়া সহ উন্নত বিশ্ব। আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এই সমস্ত দেশ হলো কথিত শুশিল-কূটনি-ধর্মীয় লেবাসধারী সংগঠন/ ব্যক্তিদের প্রভু।  প্রভুরা দান না করলে তাদের জোতা কেনার টাকা জুটবেনা।

আমাদের দেশে অনেক ধর্মীয়/বিধর্মীয় সংগঠক আছে যারা প্রতিমাসে দান খয়রাত, এয়ানত, বায়তুলমাল প্রভূতির নামে কোটি কোটি টাকা কালেকশন করে! আচ্ছা এই সংগঠকগুলো যদি এক থেকে দুই মাসের টাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেন যাতে পরবর্তীতে ধ্বসে পড়া বাড়িঘর মেরামতে কাজে লাগাতে পারে, তাহলে কি এমন ক্ষতি হয়। আল্লাহ/ঈশ্বর/ভগমানের নামে যদি দু'এক মাস টাকা খরচ না করা হয়, তাহলে কি' ভগমান না খেয়ে মরবেন?

দেশে জোড়ে পাদের আওয়াজ হলে দিল্লির নম বাবুরা হা-হুতাশ করে মরে, মাঝেমধ্যে  নিজে থেকে নসিহত নামা নিয়ে হাজির হয়,  অনেক সময় ভিতরে ক্ষতি করে বন্ধুতের দোহাই দিয়ে উপরে উপরে ভালা মানুষ সাজে। আমাদের নদীগুলো থেকে  শুষ্ক মৌসুমে তারা পানি প্রত্যাহার করে নেয়, ফলে নদীগুলো মরে যায়। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে তাদের অতিরিক্ত পানি  বন্ধুত্বের নমুনা হিসেব  আমাদের  মরা নদীতে ছেড়ে দেয়, তখন আমরা  অতি বন্য দেখতে পাই। এখন তারা চুপ কেন? এবছর উজান থেকে হঠাৎ ঢলের পানি এসে উত্তরাঞ্চলে মাঠের পর মাঠ প্লাবিত করে
 খাদ্য ভান্ডার কে অরক্ষিত/শূণ্য করেছে, এর পিছনে কোলকাতা এবং দিল্লির নম বাবুদের কালো হাত আছে। তাদের অভিশপ্ত হাতের কারণে  বাজারে চালের কেজি ৫০-৫৮ টাকা। যে গরীব ৫০ টাকা দিয়ে এক কেজি চাল কিনেন এবং বেলা-অবেলা  উপোষ থাকেন তার কাছে কি নম- বাবুরা বন্ধু হতে পারে? আর মিডিয়াতে সরকারের হবুচন্দ্র মন্ত্রীদের কান ঝালাপোড়া বক্তৃতা কি তাদের নিকট কি ভাল ঠেকে?

এখন সময় এসেছে উজানের পানির কারণে আমরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হই তার জন্য আন্তর্জাতিক দেন দরবার করা। ক্ষতিপূরণ আদায় করা, না হলে এক সময় আমাদের দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে আরো দূর্বল হয়ে যাবে। সে সময় হয়ত ক্ষতিপূরণ চাওয়ার মন মানুষিকতা হারিয়ে ফেলব। আমরা সাহায্যের জন্য তাদের কাছে হাত পাতব! 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন