অনেকের ধারণা বিশ্বব্যাপী ইসলাম কায়েম করা বাধ্যবাধকতা নেই। যারা এই ধারণা পোষণ করে তারা মূলত-
১। ধর্মীয় পূর্ণতা
২। রাষ্ট্রগত পূর্ণতা
৩। ভূখণ্ডগত পূর্ণতা
৪। জিহাদের আবশ্যতা
ইত্যাদির মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা সম্পূর্ণরুপে বুঝতে বা আলাদা করতে সক্ষম নন।
আমাদের বুঝতে হবে,
তিনি (রাসূল) জীবিত অবস্হায় হুদাবিয়া সন্ধির পর আরবের পার্শ্ববতী রাজ্যের রাজাদের নিকট দূত মারফত পত্র প্রেরণ করেছিলেন ইসলামের নিকট আত্মসমর্পণ এবং তাকে নেতা মানার জন্য। তিনি জীবনের শেষ যুদ্ধের অভিযানে গিয়ে ছিলেম রোমানদের বিরুদ্ধে। এখন রোমানরা আরব ছিল নাকি অনারব ছিল?
এখানে বিদায় হজ্জে নবী পূর্ণতা বলতে ধর্মীয় পূর্ণতাকে বুঝিয়েছেন, রাষ্ট্রগত পূর্ণতা নয়।
আপনি বা অনেকে যে রেফারেন্স দিবেন (মদিনা সনদের) এটা ইস্লামের প্রথম অবস্হার সময়ের।
আর আপনি/আপ্নারা ভালো করে জানেন যে, মক্কা বিজয়ের পর অমুস্লিমদের জিজিয়া কর দিতে হত। কিন্তু মুসলমানের জন্য জিজিয়া কর আবশ্যক ছিলোনা।
আবার
মুস্লিমদের রাষ্ট্রীয় কারাগারে যাকাত প্রদান করতে হত। অমুস্লিমদের জন্য যাকাত নয়।
এখানে দুই রকম বিধান।
ইসলামে কোথাও বলা হয়নি, সারা পৃথিবীতে জোড় জবরদস্তি করে ইসলামী ভূখণ্ড কায়েম কর। ইসলাম একথা বলে গেছে বা ইস্লামে একথা বলা আছে, তার (ইস্লামের বাণী) প্রত্যেকটি মানুষের নিকট পৌছে দাও।
উমাইয়ারা বা আব্বাসীরা সব সময় রাজ্য বিস্তারের চিন্তা করেছেন, তাদের শাসন ব্যবস্হায় ইসলামি কিছু ধারা সংযোজিত থাকার কারণে মানুষ ইহাকে বিভিন্ন এঙ্গেলে ইস্লামী রাজ্য জয় হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
এখন সারা বিশ্বে ইস্লামী রাষ্ট্র কায়েমের বিষয়ে আসি-
রাসূল (সা:) কিছু যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার পর। কিছু যুদ্ধ পরিচালনা করেছে যেগুলো তার সময়ে মক্কা ও মদিনার জন্য কার্যত বড় ধরণের হুমকি সৃষ্টি করেছিল।
এবং মক্কা বিজয় করেছেন মাতৃভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত সাহাবীদের পুনঃরায় পুর্ণবাসিত করার জন্য। অনেক সাহাবী মক্কা বিজয়ের পর পরবর্তীতে মক্কাতে স্হায়ীভাবে জীবন যাপন করেছেন।
অর্থাৎ তার প্রত্যেকটি যুদ্ধের পিছনে যুক্তিসংগত কারণ ছিল।
[এটা ব্যাপক গণ মারাণাস্ত্রের মত মিথ্যা অজুহাত নয়।]
এছাড়াও প্রাচীনককালে রাজ্য জয়ের কিছু কমন নিয়ম ছিল-
১। নিজেদের রাজ্যের জন্য অন্য কোন রাজ্য হুমকি হয়ে দেখা দিলে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা হত।
# এটা এখন আমেরিকা- ইস্রাইল অধিকতর অনুশীলন করছে।
[আম্রিকা এখন উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাওপ্যাও করছে।]
২। দুর্বল রাষ্ট্র কে সবল রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য করতে বলা হত।
#সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র সমূহ এখনো এই নীতি পালন করছে।
৩। যে রাজ্যের শক্তি সার্মথ্য বেশি ছিল তারা চাইলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্র সমূহে অভিযান পরিচালনা করে তা হস্তগত করতেন এবং নিজেদের পছন্দের লোক বসিয়ে তাতে শাসন কার্য পরিচালনা করা হত।।
#বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে নজর দিলে বর্তমানে এর নমুনা দেখতে পাবেন।
তাছাড়া জাতিসংঘ ধারণা এসেছে হপ্পায় হেদিনকা।
তাছাড়া
রাসূল বা খলিফাদের আমলে বা সে সময় রাষ্ট্রীয় ভূখন্ডের নির্দিষ্ট সীমারেখা ছিলোনা।
যেহেতু সে সময় রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ড ছিলোনা সেহেতু আপনার বক্তব্য ধোপে টিকবেনা।
এখন যেহেতু রাষ্ট্রীয় ভূখণ্ডগত ধারণা এবং জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেহেতু প্রত্যেক রাষ্ট্রের উচিৎ হবে তার অধিবাসীদের ধর্মীয় মত পালনের স্বাধীনতা দেয়া। যারা এর ব্যতিক্রম করবে তাদের বিরুদ্ধে-
আপনার জিহাদ ফরয।
যারা ইস্লামী রাষ্ট্রের কার্যত নিরাপত্তা বিঘ্নত করবে তাদের বিরুদ্ধে আপনার জিহাদ ফরয হবে।
আপনি প্রস্তুত তো?
এখন বুঝলে ভালো আর না বুঝলে সত্য বুঝার চেষ্টা করেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন