শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২

একুশ শতকের ধর্ম চিন্তা। আস্তিক ও নাস্তিক ধর্মের সাদৃশ্যতা।

মানুষের জীবনে ধর্ম পালন করা কি খুব জরুরী? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আপনাকে খানিকক্ষণ ভাবতে হবে। এই ভাবা অমূলক নয়। কেননা প্রতিটি মানুষ কোন না কোন ধর্ম লালন ও পালন করে থাকে। এখন যদি বলা হয় নাস্তিকরা কোন ধর্ম পালন করে না। কথাটি আংশিক সত্য হলেও বাকিটুকু মিথ্যা। কেননা নাস্তিকরা হয়ত ইবাদতীয় সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে না, কিন্তু তারা নানা অইবাদতীয় সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাস করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তারা কোন ঘটনা ঘটার পর সেটাকে প্রাকৃতিক ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দেয়। এখানে এই 'প্রাকৃতিক' বিষয়টা বা প্রাকৃতিক শক্তিটা একটা সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর। 

অনেক নাস্তিক মানবতাকে পরম জ্ঞানে মানে এবং পূজা করে। এখানে এই 'মানবতা'ও একটি ঈশ্বর বা গড। কেননা যিনি মানবিক তিনি মানবতা বুকে ধারণ করেন। তেমনি, যিনি ধার্মিক তিনিও ধর্মকে বুকে ধারণ করেন। ধর্ম ও মানবতা উভয়ই বুকে ধারণ করা যায়, এবং উভয়ই ব্যবহারিক কার্য সম্পাদন করা যায়।

যারা সৃষ্টি কর্তায় বিশ্বাসী তারা বিশ্বাস করে প্রতিটি ঘটনা ঘটার পিছনে সৃষ্টিকর্তার হাত আছে। আবার যারা নাস্তিক তারাও বিশ্বাস করে প্রতিটি ঘটনা ঘটার পিছনে কোননা কোন কারণ আছে। এখানে সৃষ্টিকর্তা ও 'কারণ' উভয়ই ঘটনা ঘটার পিছনে দায়ী। উভয়কেই প্রভাবক হিসেবে দুই শ্রেণির মানুষ বিশ্বাস করে। 

এবার লক্ষনীয় পার্থক্য হলো, যারা ইবাদতীয় খোদায় বিশ্বাস করে তারা খোদাকে অসীম ক্ষমতাধর, পৃথিবী ও মহাকাশের সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রক এবং নিজের ভালো মন্দ তাকদির বা ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক হিসেবে মানে। কিন্তু যারা প্রকৃতি পূজারী বা মানবতার পূজারি হিসেবে নিজেদেরকে পরিচয় দেয় তারা প্রকৃতি ও মানবতাকে অসীম ও সবকিছুর নিয়ন্ত্রক হিসেবে পূজা করতে নারাজ।

সৃষ্টিকর্তায় পূজারিদের বিশ্বাস অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা হলেন তিনি, যে এই মহা জগৎের সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি মরণের পরে ভালো মন্দের হিসাব নিয়ে তার প্রতিদান নিজ হাতে দিবেন। অর্থাৎ মন্দের জন্য নরক এবং ভালোর জন্য জান্নাত দান করবেন। অপর দিকে নাস্তিকদের বিশ্বাস করে সবকিছু বিবর্তন অনুযায়ী হয়েছে এবং সবকিছু বির্বতন অনুযায়ী পৃথিবীতে তার গঠনগত আকৃতি লাভ করেছে। অর্থাৎ 'বির্বতন' এখানে দুনিয়ায়তে সব সৃষ্টিকে তার প্রতিদান দিয়েছেন। যিনি যোগ্য তিনি বড়/ভালো বা উত্তম মস্তিষ্কের প্রাণীতে রুপান্তর হতে পেরেছেন। আর যিনি তুলনামূলক অযোগ্য তিনি তার চেয়ে অধম প্রাণীতে রুপান্তর হয়েছেন। সুতরাং এখানে দেখা যাচ্ছে যে 'বিবর্তন' সৃষ্টিকর্তার কাজ করেছে। 

চলবে...।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

Sample Notice of Share Transfer

Intimation of Intended Share Gift by Mr. DK Khan, Managing Director,  ST Securities Limited