বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২

নাস্তিক্যবাদ পরিহার ও সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করা কেন জরুরি- সত্যের ছায়া।

মানুষের নিত্য নতুন আবিস্কারের নেশা সেই আদিকাল থেকেই। আবিস্কারের বন্ধ জানালা খুলতে খুলতে আমরা এখন অত্যাধুনিক যুগে প্রবেশ করেছি। সামনে হয়ত অজানার নতুন নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। কিন্তু মানুষ তার নিজেকে নিজের আবিস্কার করার যে মহৎ দায়িত্বটা রয়েছে, তা রয়ে যাবে সেই আদিকালের পথে। 


আচ্ছা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো আপনি নিজেকে নিজে কতটুকু আবিস্কার করেছেন? উত্তর যা আসবে তা হলো "কিঞ্চিৎ" বা সামান্য। এমন মানুষ আছে যারা তার সহধর্মীনীর সাথে চল্লিশ বছর এক সাথে ঘর সংসার করার পরেও তাকে  নতুন করে  আবিস্কার করে, স্ত্রী নামক প্রাণীর কাছে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধাঁধায় পরতে হয়। এ ধাঁধা যেন চোখে প্রস্ফুটিত আলোর পাশে বিশাল এক কৃষ্ণ গহব্বর।

মানুষ নিজেকে নিজে আবিস্কার না করার কারণেই পৃথিবীতে ধর্মের আগমন ঘটেছে। ধর্ম প্রচারকরা নিজেকে আবিস্কার করতে গিয়ে ধর্মের পথ ও মত খুঁজে পেয়েছেন। তাদের আবিস্কারের মূল সারমর্ম হল দুনিয়াতে নিজেকে পুরাপুরি আবিস্কার করা সম্ভব নয়। নিজেকে পুরাপুরি আবিস্কার করতে হলে আত্মাকে পরকালের প্রতি ডাইভারশন মুতাওয়াজ্জিহান করতে হবে। সেজন্য আল্লাহ, খোদা বা  ঈশ্বরকে অলীক, অচিন্তনীয় মেনে নিয়ে তাকে সর্বময় ক্ষমতার উৎস ভাবতে হবে। তার আরধনা করতে হবে। তার নির্দেশিত বিধিনিষেধ কঠোর ভাবে পালন করতে হবে। নিজেকে ঈশ্বরের প্রতি সপে দিয়ে নূরে তাজাল্লীতে জ্বলসাতে হবে। কামেল ওলি আল্লাহ হতে পারলে বা বাকাবিল্লাহ- ফানাফিল্লাহ স্তরে পৌঁছাতে পারলে জীবন সার্থক হবে। বিধিনিষেধ পালন করলে কনফার্ম জান্নাতি। অমান্য করলে কনফার্ম জাহান্নামী। 

বিপরীত দিক থেকে, 
বাস্তুবাদী বা জড়বাদী নাস্তিকরা আবার  এই "ঈশ্বর তত্ত্বের" ঘোর বিরোধী । তাদের প্রধান যুক্তি হলো, কাউকে না দেখে, না বুজে, প্রমাণ না করে, তাকে সৃষ্টকর্তা, পালনকর্তা, মহাজগৎ নিয়ন্ত্রক কর্তা এবং সর্বময় শক্তির উৎস ভাবা নিরর্থক ও বোকামী। তার আনুগত্য করা প্রশ্নই আসেনা। তাকে তখনই আনুগত্য করা যাবে যখন সে নিজ থেকে প্রকাশিত হবে। তিনি কি এতই অক্ষম যে একজন ধর্মগুরু বা নবী রাসূল তাকে প্রকাশিত করতে হবে। নাস্তিকদের মতে, কথিত ও ভিন্নভিন্ন ধর্মে ভিন্ন-ভিন্ন ঈশ্বরের নাযিলকৃত ভিন্নভিন্ন জীবন বিধান সমূহ ফ্যান্টাসি । এগুলো যারা বিশ্বাস করে, পালন করে তারা পন্ডশ্রম দেয় এবং বোকার রাজ্যে বসবাস করে। নাস্তিকদের সবচেয়ে তীব্র আপত্তি হলো পরকালীন জীবন যেমন- কিয়ামত, শেষ বিচার, জান্নাত এবং জাহান্নাম। তাদের মতে, কিয়ামত, হাশর, পুলসিরাত, জান্নাত বা জাহান্নাম রুপকথা । এই রুপকথা যারা অন্তরে ধারণ করবে তারা দুনিয়া থেকে গাফেল হয়ে যাবে, তারা উৎপাদন বিমুখ হবে, চরম উন্নতির শিখরে পৌছাতে ব্যার্থ হবে, যা একজন মানুষের জন্ম সার্থকতাকে নিরর্থক করে দিবে।

অপর দিকে, ধর্মকামীরা মনে করে, মানব জন্মের প্রধান উদ্দেশ্য হলো ঈশ্বরকে জানা, ঈশ্বরের বিধিনিষেধ পালন করা এবং তার একাত্ববাদ মেনে  ইবাদত করা। যারা ঈশ্বর কে অস্বীকার করবে  তারা দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেহেতু ঈশ্বরই আমার সৃষ্টিকর্তা সুতরাং তার আনুগত্য প্রশ্নে আপোষ করা যাবেনা।

এবার আসুন জেনে নেই এই সম্পর্কে সত্যের ছায়া কি জানেঃ 

নাস্তিকদের পরকালীন জীবন সম্পর্কে আলোকপাতঃ নাস্তিকদের কথায় ধরে নিলাম সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নেই আর ছিলোনা। তাই সৃষ্টিকর্তাকে অবিশ্বাস করে ধর্মহীন জীবন যাপন করলাম। তারপর একদিন যথা নিয়মে মৃত্যু বরণ করলাম। মৃত্যুবরণ করার পর যদি দেখি সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নেই তাহলে আমি বেঁচে গেলাম। আর যদি মৃত্যুবরণ করার পর দেখি সত্যি সত্যি একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং তিনি আমাকে সত্যি সত্যি বিচারের মুখোমুখি দাড় করিয়েছেন, তখন আমার কি অবস্থা হবে?  তখন কি নাস্তিকরা আমাকে তার (খোদার) হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন? তারা তাদের প্রচারিত নাস্তিক্যবাদ কি কোন উপকারে আসবে? তারা কি সেদিন আমাকে সৃষ্টিকর্তার হাত থেকে বাঁচাতে সক্ষম হবেন? উত্তর অবশ্যই না।  তাই সৃষ্টিকর্তা থাকার সম্ভাবনা যদি এক পারসেন্টও সত্যি হয় তাহলে তাকে অবশ্য  বিশাস করতে হবে, তার বিধিনিষেধ যথাযথ পালন করতে হবে।

সাধারণ ধর্মকামীদের সম্পর্কে আলোকপাতঃ
ধর্মকামীরা প্রায় ডেলিভারী বা বুলি আওড়ায়, "দুনিয়াতে যারা ঈশ্বর কে অস্বীকার করবে তার দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" আমার মতে, ইহা আংশিক বাদে পুরোটা গাঁজাখুরি কথা। এই ধরণের চিন্তাভাবনা তাদের উর্বর মস্তিষ্কের ফসল। কারণ, অবিশ্বাসীদের জন্যই পৃথিবী, তারা দুনিয়াতে খেয়ে দেয়ে আমোদ ফূর্তি করে বেড়াবে। ঈশ্বরের আইন কে থোরাইকেয়ার করবে, সীমালংঘন করবে, সীমালঙ্ঘন করে ঈশ্বরকে পাশকাটিয়ে যাবে। কেননা সীমালংঘন করার মাঝেই দুনিয়াতে প্রকৃত সুখ নিহিত । আর প্রকৃত সুখ মানেই জান্নাতী আবহ। সুতরাং, ধর্মকামীরা যে কথায় কথায় আবাল ডেলিভারি (নাস্তিকদের দুনিয়া ও আখেরাত ক্ষতিগ্রস্ত)  দেয় তা সম্পূর্ণ অজ্ঞতার ফল। অর্থাৎ, অবিশ্বাসীদের জন্যই দুনিয়া ক্ষতিগ্রস্ত নয়। অবিশ্বাসীদের জন্য দুনিয়া জান্নাত। আর মুমিনরা সেই দুনিয়াবি জান্নাতের পরগাছা।
 
এখন বলতে পারেন কাদের জন্য পৃথিবী ক্ষতিগ্রস্ত? এর উত্তর দুইভাবে দেয়া যায়, এক, ধর্মকামীদের দৃষ্টিতেঃ  যারা আল্লাকে বিশ্বাস করার পরেও তার হুকুম আহকাম ঠিকমতো পালন করে নাই তাদের জন্য  দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় ক্ষতিগ্রস্ত । দুই, নাস্তিক বা বাস্তুবাদীদের দৃষ্টিতেঃ দুনিয়াতে যারা প্রতিষ্ঠিত হয়নি তাদের জন্য দুনিয়া ক্ষতিগ্রস্ত। এখানে প্রতিষ্ঠিত বলতে, টাকা পয়সা, নাম, খ্যাতি, ক্ষমতা ইত্যাদি বুঝানো হয়েছে। 

আপ্নারা কি বলেন?

এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

Sample Notice of Share Transfer

Intimation of Intended Share Gift by Mr. DK Khan, Managing Director,  ST Securities Limited