সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

বিপদের কারণ ও বিপদ থেকে উদ্ধারের বাস্তব ভিত্তিক পদক্ষেপ সমূহ

যখন কখন ব্যক্তি স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অস্বাভাবিক অবস্থায় যেমন প্রতিকূল পরিবেশ,

শত্রুদ্বারা বেষ্টনী, প্রতিপক্ষের হামলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক সংকট, অবরোধ ইত্যাদিতে পতিত হয় তখন তাকে বিপদ বলে। বিপদে পতিত হওয়া নানাবিধ কারণ রয়েছে, তারমধ্যে, পরিবেশের ক্ষতি সাধণ, হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, ক্ষমতা, প্রতিপক্ষকে হয়রানি, দাবড়ানি, একক কর্তৃব্য অর্জণ, ক্ষমতা দখল ইত্যাদি কারণে কারণ অন্যতম।। কারণ ছাড়া কোন বিপদ ঘটেনা, বিশেষ করে মনুষ্য সৃষ্ট বিপদ সমূহ।

বিপদের প্রকারভেদঃ বিপদ দুই প্রকার যথাঃ এক. প্রাকৃতিক বিপদ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুই. মনুষ্য সৃষ্ট বিপদ।

এক. প্রাকৃতিক বিপদঃ প্রাকৃতিক বিপদ বলতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কে বুঝায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে খড়া, বন্যা, জলোশ্বাস, টর্নোডো, সাইক্লোন, নদী ভাঙ্গণ, আগ্নেয়গিড়ি, বনে অগ্নিকান্ড ইত্যাদি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটার পিছনে কোন না কোন ভাবে মানুষ দায়ী। যেমন অধিক মাত্রায় কার্বণ ডাই অক্সাইড বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি সহ, বন্যা, সাইক্লোন, মরুকরণ ঘটছে।

দুই. মনুষ্য সৃষ্ট বিপদঃ মনুষ্য সৃষ্ট বিপদের মধ্যে হামলা, মামলা, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক অপরোধ, জোর জুলুম, নির্যাতন, অবৈধ দখল, অবিচার, শোষণ ইত্যাদি অন্যতম। মানুষ চাইলে মনুষ্য সৃষ্ট বিপদগুলো সহজে এড়িয়ে যেতে পারে। এতে করে অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে।

বিপদ ঘটার কারণঃ বিপদ বিভিন্ন কারণেই ঘটতে পারে। প্রাকৃতিক বিপদগুলো দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশের বিরুপ প্রভাবের ফল। তাছাড়া এমন কিছু বিপদ আছে যেগুলোতে মানুষের হাত নেই বললেই চলে এই বিপদগুলো মানুষ চাইলে সহজে মোকাবেলা করতে পারেনা; যেমন ভূকম্পন বা ভুমিকম্পন। তবে মানুষ দ্বারা সৃষ্ট বিপদগুলো চাইলেই মানুষ এড়িয়ে যেতে পারে এবং প্রতিরোধের ক্ষমতা রাখে যেমন যুদ্ধ। হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ, ক্ষমতা, প্রতিপক্ষকে হয়রানি এবং দাবড়ানি, একক কর্তৃব্য অর্জণ, ক্ষমতা দখল ইত্যাদি কারণে বিপদ ঘটে।

বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষ চাইলেই সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারেনা। তবে মানুষ্য সৃষ্ট বিপদ থেকে ১০০% মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বিপদ থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমে অনুসন্ধান করতে হবে বিপদের কারণ,  দ্বিতীয়ত প্রতিকারের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সার্পোট কি পরিমাণে আছে তা নিরুপণ, তৃতীয়ত প্রয়োজনীয় দ্রুত বাস্তভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ, চতুর্থ বিপদ মোকাবেলার পর প্রয়োজনীয় পুর্নবাসন, পঞ্চমত পূর্বের অবস্থায় ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন।

বিপদের সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতা অনুসন্ধানঃ যেহেতু বিপদ আপনি আপনি ঘটেনা বিপদ ঘটার পিছনে কোন কোন প্রভাবক জড়িত আছে সেহেতু বিপদের পিছনে নিজের কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা অনুসন্ধান করতে হবে। নিজের যদি কোন সংশ্লিষ্টতা থাকে তাহলে নিজেক সেখান থেকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ভবিষ্যৎে এ ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। নিজের সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণে অন্য যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে তাকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী। তারা অনুন্নুত এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশ সমূহকে ক্ষতিপূরণ তে সম্মত হয়েছে।

বিপদের কারণ অনুসন্ধানঃ বিপদ মোকারবেলার পূর্ব শর্ত হচ্ছে বিপদের কারণ অনুসন্ধান করা। বিপদের কারণ বের করতে পারলে বিপদ মোকাবেলা করা অনেক সহজ। কি কারণে বিপদ ঘটেছে, কারা কারা ঘটিয়েছে,  কার কার হাত আছে, কি ধরণের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করেছে, কি পরিমাণ সমস্যার সম্মুখীণ হয়েছে ইত্যাদি নিরুপণ করা আবশ্যক।

প্রয়োজনীয় লজিষ্টিক সার্পোট প্রস্তুত করণঃ বিপদে পড়লে ধৈয্য হারা হওয়া যাবেনা। সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে হবে, এই বাক্যটি অতি প্রাচীন। তাই বিপদে পড়লে যথাদূর সম্ভব চারপাশে খেয়াল রাখতে হবে। আসন্ন বিপদ কিভাবে মোকাবেলা করা যায়. কি দিয়ে মোকাবেলা করা যায়, মোকাবেলা করতে গেলে কি কি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হবে ইত্যাদি নির্ধারিত করে প্রয়োজনীয় কর্মী, যন্ত্রাংশ, অর্থ, প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রস্তুত রাখতে হবে।

চিত্রঃ বিপদ থেকে উদ্ধারের ধাপ সমূহ

বাস্তব ভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণঃ আপদকালীন সময়ে একটি বাস্তব ভিত্তিক পদক্ষেপ একজন মানুষকে বিপদ থেকে মুক্তি দিতে পারে। বিপদের সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতা অনুসন্ধান, বিপদের কারণ অনুসন্ধান, প্রয়োজনীয় লজিষ্টিক সার্পোট প্রস্তুত করণ অতঃপর বাস্তভিত্তিক পদক্ষপ গ্রহণ করতে হবে। ঘটনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং ঘটনা মোকাবেলা করতে গেলে কি কি বিপদ হতে পারে তা মাথায় রেখে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় পুর্নবাসনঃ এই পর্যায়ে এসে ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে প্রয়োজনীয় পুর্নবাসন করতে হবে। বিপদকালীন সময়ে কতজন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সম্পত্তি কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নিরুপণ করে প্রয়োজনীয় পুনঃবাসন করতে হবে। এলক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অর্থ ও ম্যান পাওয়ার সংস্থাপন করা প্রয়োজন।

স্বাভাবিক জীবন যাপনঃ এই পর্যায়ে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে হবে। অতীতের সবকিছুকে ভুলে যেতে হবে, তবে ভবিষ্যৎে আসন্ন বিপদকে মাথায় রেখে প্রস্তুতি রাখতে হবে। ভবিষ্যৎ বিপদ মোকাবেলায় স্বাভাবিক জীবনের অপরিহার্যতা রয়েছে।

পরিশেষে, বিপদে নিপাতিত হলে ধৈর্ঘ হারা না হয়ে সাহসের সাথে মোবাবেলা করতে হবে। মনে মনে সৃর্ষ্টিকর্তার নাম জপতে হতে। বিপদের কারণ অনুসন্ধান করে ভবিষ্যৎে সাবধান হতে হবে। বিপদ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় লোকবল, অর্থ এবং যন্ত্রাংশ প্রস্তুত রাখতে হবে। তাহলে আগাম বিপদ মোকাবেলা সম্ভব হবে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

Sample Notice of Share Transfer

Intimation of Intended Share Gift by Mr. DK Khan, Managing Director,  ST Securities Limited