পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

সীমানা প্রাচীর বা প্রকল্পের দেয়াল নির্মাণ চুক্তিনামা সম্পাদন করার নিয়ম- সত্যের ছায়া

বাড়ি, প্রকল্প, নিজস্ব জমি বা অন্য যেকোন প্রকারের অবকাঠামোর সীমানা প্রাচীর বা দেয়াল নির্মাণর জন্য চুক্তিনামা সম্পাদন করতে হয়। চুক্তি সম্পাদনের পূর্বে চুক্তিনামায় কি কি শর্ত থাকার প্রয়োজন সে সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। নিম্নে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের চুক্তিনামার শর্ত  ও একটি নমুনা দেয়া হলোঃ

সীমানা প্রাচীর নির্মাণের চুক্তিনামার শর্ত সমূহঃ (ক) প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের যাবতীয় বিবরণ (খ) প্রস্তাবনা (গ) কাজের শর্তাবলী (ঘ) কাজের ধরণ বা বিবরণ  (ঙ) বিল প্রদানের শর্তাবলী (চ) সংক্ষিপ্ত হলফনামা (ছ) উভয়পক্ষ এবং স্বাক্ষীর নাম, স্বাক্ষর ও তারিখ।


নমুনাঃ

(তারিখঃ ৩০/০৭/২০১৮)

বিসমিল্লাহির রাহ্মানির রাহীম)

সীমানা প্রাচীর নির্মাণের চুক্তিনামা

মার্টিন এস কোম্পানী লিমিটেড  এর পক্ষে  এস এইচ  হোসাইন, পরিচালক-, ঠিকানাঃ লাল মাটিয়া, ঢাকা, ঢাকা-১২১২। ------------ ১ম পক্ষ।

এবং

মের্সাস ডিকে ট্রেডিং এজেন্সি, স্বাত্বাধিকার- মোঃ হোসেন সেলিম, উত্তরা, ঢাকা।-----২য় পক্ষ।

মার্টিন এস কোম্পানী লিমিটেড এর বগুড়া, জেলার কাহালু উপজেলার ভাঙ্গা ইউনিয়নে অবস্থিত  ’গ্রিনসিটি প্রকল্পে’ এর ১৫০ একর এর অধিক এলাকা জুড়ে বিস্তর প্রকল্প এরিয়া বিদ্যমান। প্রকল্পের দক্ষিণে প্রবাহমান যমুনা নদী ব্যতীত অবশিষ্ট তিন দিকে  মার্টিন এস কোম্পানী লিমিটেড এর সীমানা প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। উক্ত প্রকল্পে চলমান সীমানা প্রাচীরের মধ্যবর্তী ছোট/বড় ০৫/০৬ টি স্থানে (সংযুক্ত নকশা মোতাবেক) সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে, যাহা হতে প্রকল্প এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে উক্ত ০৫/০৬টি স্থানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ সম্পন্ন করার জন্য মের্সাস ডিকে ট্রেডিং এজেন্সি, (মালিকঃ হোসেন ও সহযোগী আকবর) -২য় পক্ষ,  গত ১০মে ২০১৮ তারিখে কর্পোরেট অফিসে ১ম পক্ষের প্রতিনিধি জিএম প্রজেক্টের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে উক্ত অসমাপ্ত সীমানা দেয়াল ৯’ উচ্চতায় নির্মাণ (বিদ্যমান সীমানা দেয়ালের অনুরুপ) এবং নির্মাণ পরবর্তী নির্মাণস্থানের অক্রয়কৃত জমির ক্রয় প্রক্রিয়া দ্রæত সম্পাদন করার সার্বিক দায়িত্ব নেয়ার জন্য ২য় পক্ষ মালামাল ও মজুরী সহ রানিং ফুট ---------- টাকা হিসেবে লিখিত দর প্রস্তাবনা পেশ করেন। উক্ত প্রস্তাবনার আলোকে এবং উভয় পক্ষের ঐক্যমতের ভিত্তিতে অসমাপ্ত দেয়াল অংশটুকু (কমবেশি -------------- রানিং ফুট) নিজ দায়িত্বে ১ম পক্ষের ক্রয়কৃত জায়গার উপর নির্মাণ সম্পূর্ণ করার জন্য অত্র চুক্তিনামা অদ্য ----------------তারিখে সম্পাদিত হয়।  নিম্নে বর্ণিত শর্তাবলী সাপেক্ষে অত্র চুক্তিনামার কাজ শুরু হয়ঃ 

শর্তাবলী সমূহ

উভয় পক্ষ নিম্নে বর্ণীত বিষয়সমূহে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কার্য সম্পাদনে চুক্তিবদ্ধ হনঃ

১। সংযুক্ত এনেক্স এর দেয় নকশা মোতাবেক ০৫টি অনির্মিত স্থানে ভূমি হতে ০৯ ফিট উচ্চতার সীমানা দেওয়াল নির্মাণ করতে হবে । সমগ্র নির্মাণ কাজ আরসিসি এবং ১০” ব্রীক দেওয়ালের সমন্বয়ে দেয় নকশা মোতাবেক  (মোট ০৪ সেট) সম্পাদিত হবে।

২। নির্মীতব্য সীমানা প্রাচীরের মাপ ------------- রানিং ফুট ( কম/বেশি) এবং উচ্চতা হবে ফাউন্ডেশন বেইজ হতে ০৯ ফুট (দেয় ক্রস সেকশন নকশা মোতাবেক) ।

৩। ২য় পক্ষ (মেসার্স তানহা এন্টার প্রাইজ) অত্র চুক্তিপত্র স্বাক্ষর পরবর্তী  সম্পূর্ণ  নিজস্ব খরচে প্রকল্পের বর্ণিত সীমানা দেওয়াল নিমার্ণ কাজ আরম্ভ এবং সর্বাধিক ৩০ দিন সময় কালে সমগ্র অসম্পূর্ণ দেয়াল নির্মাণ কাজ সম্পাদন নিশ্চিত করবে।

৪। ২য় পক্ষ তার দেয় প্রস্তাবেনা মোতাবেক ব্যবহৃত যাবতীয় নির্মাণ মালামাল সমুহ উন্নত মানের সরবরাহ নিশ্চিত করবেন।

৫। প্রথম পক্ষ কর্তৃক প্রদানকৃত ডিজাইন, ড্রয়িং এর দেয় ক্রস সেকশন মোতাবেক প্রকৃত দেয়াল নির্মিত হবে। এছাড়া ১ম পক্ষের নিম্নে বর্ণিত কারিগরী নির্মাণ দিক নির্দেশনা মোতাবেক সমগ্র নির্মাণ সম্পাদন করতে হবেঃ

(ক) প্রতি ৮ ফুট পর পর ৩’৩’ মাপের কলাম ফুটিং হবে যার মোট পুরুত্ব ১৫”, নিচে ৩” ব্রিক সলিং এবং তাহা হতে ১৪”*১২” মাপের ৭.৫’ উচ্চতা পর্যন্ত কলাম উঠবে। মিশ্রণ অনুপাত ১:১.৫:৩ হবে।

(খ) ঠবৎঃরপধষষু ২’ উচ্চতায় উঠার পর টানা এৎধফব ইবধস হবে ১২”* ১০”। মিশ্রণ অনুপাত ১:২:৪ হবে।

(গ) এৎধফব ইবধস হতে ৫’-৬" পর্যন্ত কলাম উঠবে,  মিশ্রণ অনুপাত ১: ১.৫:৩ হবে।

(ঘ) মধ্যবর্তী স্থানে ১০” ইটের দেয়াল গাঁথুনি এবং উভয় পাশে প্লাস্টারিং হবে।

    

৬। ২য় পক্ষ কর্তৃক সরবরাহকৃত মালামাল সমূহ এবং মিস্ত্রি কাজের বিবরণঃ (১ম পক্ষ মালামাল সমূহের নিরীক্ষার পূর্ণ অধিকার রাখবেন এবং প্রয়োজনে অগ্রহণযোগ্য মালামাল ২য় পক্ষ কে ফেরত ও প্রতিস্থাপন করতে হবে)।

(ক) ইটা ০১ নং মানের হতে হবে।

(খ) সিমেন্টঃ  সেভেন রিং- অথবা সমতূল্য ।

(গ) রড     বিএসআরএম ( ১৬মিঃমিঃ / ১২মিঃমিঃ/১০-০৮মিঃমিঃ)-৬০/৪০ গ্রেড।

(ঘ) খোয়াঃ ৩/৪’’ অথবা ডাউন গ্রেড সাইজ ১নং পিকেটের খোয়া।

(ঙ) বালিঃ এফএম ২.০ হতে ২.৫ পর্যন্ত উন্নতমানের বালি দ্বারা আরসিসি / গাঁথুনি/ প্লাস্টারের কাজ করা। 

(চ) নির্মাণ আনুষঙ্গিক অন্যান্য মালামাল সমূহঃ উন্নতমানের হতে হবে।

(ছ) পানি আনা/ মাচাকরা/ অন্যান্য আনুষঙ্গিক নির্মাণ সহায়ক সামগ্রী প্রদান।

(জ) সকল প্রকার মালামাল সাইটে সরবরাহ এবং নির্মাণ কাজের মজুরী বিল বহন করা ।

৭। মালামালের গুণগত মান যাচাই এবং করণীয়ঃ উপরোক্ত অনুচ্ছেদ ৬ তে প্রদর্শিত এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক নির্মাণ মালামাল, যাহা ২য়পক্ষ নির্মাণ সম্পাদনকালীন সরবরাহ করবে তাহা ১মপক্ষের প্রতিনিধি (সাইট ইঞ্জিনিয়ার/প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ার/জি-এম প্রকল্প) কর্তৃক সর্বদা নিরীক্ষা করা হবে। আপত্তিকর নিম্নে মানের মালামাল সমূহ ১ম পক্ষের আপত্তির প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ২য় পক্ষ কে স্থানান্তর করত: চাহিদা মোতাবেক মালামাল সরবরাহ ও কাজ নিশ্চিত করতে হবে। উক্ত শর্তের ব্যতিক্রম ঘটলে ১মপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের যাহা জরিমানা/চুক্তি বাতিল ইত্যাদি সর্বময় ক্ষমতা রাখবেন। উল্লেখ্য, নির্মাণ কার্য চলাকালীন ২য় পক্ষ তার নিজ দায়িত্বে যথাযথ কিউরিং এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। এছাড়াও সাইটে সংগ্রহকৃত/মজুদকৃত মালামাল সমূহের (অগ্রিম) রক্ষণা বেক্ষণ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা ২য়পক্ষ কে বহন করতে হবে।   

৮। নির্মানাধীন স্থানে নির্মাণ কার্য চলাকালে কোনরূপ অযাচিত/অনাকাংখিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা ২য় পক্ষ সম্পুন্ন ভাবে তার দায়ভার বহন করবেন। যেকোনরূপ আর্থিক ব্যায়ভার প্রদানের বিষয় উদ্ভুত হলে তার সার্বিক দায় ২য় পক্ষকে বহন করতে হবে।

৯। ২য় পক্ষ কর্তৃক দেওয়াল নির্মাণ কাজ সম্পুন্ন হবার পূর্বেই বর্ণিত নির্মাণ স্থানের জমি (যাহা ক্রয় বাকী), ২য় পক্ষের নিজ উদ্যোগে ১ম পক্ষের সাথে সম্পাদিত আগষ্ট ২০১৭ এর সম্পাদিত চুক্তিনামা মোতাবেক নির্মাণ পরবর্তী ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। এ সংক্রান্ত জমি মালিকের ওজর আপত্তি ২য় পক্ষকে নিষ্পত্তি করতে হবে।  উক্ত জমির অর্থ লেনদেন বর্ণিত ২০১৭ এর চুক্তিনামার অধীনে সম্পাদিত হবে।

১০। ধার্যকৃত কাজের রেটঃ ২য় পক্ষের দেয় প্রস্তাবনা এবং ১ম পক্ষ কর্তৃক চলমান বাজার দর যাচাই এর প্রেক্ষিতে ও উভয়পক্ষের সমন্বয়ে প্রতি রানিং ফুট ---------------- ( সকল মালামাল,মজুরী এবং অযাচিত পরিস্থিতির মোকাবেলায় যাবতীয় খরচ ২য় পক্ষ কর্তৃক বহন করতে হবে) ধার্য করা হয়।

১১।  প্রকল্প চলমানকালীন সময়ে সমস্ত কাজের নির্মাণ তদারকি (তত্ত¡াবধান) ১ম পক্ষের সিদ্ধান্ত  এবং নির্দেশনা অনুযায়ী  ২য় পক্ষকে উক্ত প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে।।

১২। বিল প্রদান পদ্ধতিঃ প্রকল্প কমিটির (জিএম-প্রজেক্ট, প্রকল্প ইঞ্জি:, সাইট ইঞ্জি:) বিল পর্যাবেক্ষণ ও সুপারিশের ভিত্তিতে নিম্নরুপ ভাবে পার্ট প্রদান পদ্ধতিতে প্রকল্প ইঞ্জিনিয়ারের সুপারিশ ভিত্তিতে বিল প্রদান করা হবেঃ

(ক) কাজের ৩০% অগ্র গতির ভিত্তিতে ১ম পার্ট পেমেন্ট ও মানি রিসিট প্রদান/গ্রহন করা হবে।

(খ) পরবর্তী ৩০% কাজ শেষে ২য় পার্ট পেমেন্ট ও মানি রিসিট প্রদান/গ্রহন করা হবে।

(গ) শেষের ৪০% অথাৎ চুড়ান্ত কাজ শেষে অবশিষ্ট পেমেন্ট ও মানি রিসিট প্রদান/গ্রহন করা হবে।

নোটঃ প্রতি ক্ষেত্রেই মোট বিলের ১০% নিরাপত্তা জামানত হিসেবে মজুদ রাখা হবে। সমগ্র কাজ সমাপনান্তে ৩ মাস অতিক্রম হবার পর পৃথক বিল প্রদান করার মাধ্যমে উহা উত্তোলন করা যাবে।

১২।উপরোক্ত শর্তাবলী সমূহ আমরা উভয়পক্ষ সজ্ঞানে ও স্থিরচিত্তে একমত পোষণ করত: নিজ নিজ শ্বাক্ষর সম্পাদন করলাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন