সর্বজনীন পেনশন বলতে সেই পেনশনকে বুঝায় যা একটি দেশের সরকার তার সকল নাগরিকদের জন্য আইনগত কাঠামোর মাধ্যমে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে পেনশনের আওতায় নিয়ে আসে।
আইনগত ভিত্তিঃ ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সাথে করপোরেশনের কর্মচারীদের সংযুক্ত করে “গণ গণকর্মচারী (অবসর) আইন” পাস করা হয়। সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ) পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা চালু রয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩, Word & Pdf ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুণ
সর্বজনীন পেনশনের সুবিধাঃ এই পেনশনের আওতায় পেনশনভোগীদের স্মার্টকার্ড ইস্যু করা হবে। প্রত্যেক নামদারী ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের পাবেন। বর্তমানে
সর্বজনীন পেনশনের বিভিন্ন দিকঃ প্রথম আলো কর্তৃক আইন বিশ্লেষণ করে সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য কিছু দিক জানতে পেরেছেন। সেগুলো একনজরে দেখে নিনঃ
১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব কর্মক্ষম নাগরিক সর্বজনীন
পেনশনব্যবস্থায় আসবেন।
প্রত্যেক পেনশনধারী আজীবন পেনশনসুবিধা ভোগ করবেন।
প্রবাসী বাংলাদেশীরাও অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরাদের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতে তাঁদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
দুটি ধাপে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে; প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ স্বেচ্ছাধীন থাকবে, দ্বিতীয় ধাপে বাধ্যতামূলক হবে।
পেনশন হিসাব খোলা হবে জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার অনুযায়ী।
একটানা দশ বছর চাঁদা দেয়ার পর মাসিক পেনশন পাওয়ার পর পেনশন পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
প্রত্যেক নাগরিকের নামে আলাদা আলাদা হিসাব খোলা হবে। কর্মস্থল পরিবর্তন করলেও অপরিবর্তিত থাকবে এ হিসাব।
মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত থাকবে। তবে প্রবাসী কর্মীরা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতেও চাঁদা জমা দিতে পারবেন।
সর্বজনীন পেনশনপদ্ধতিতে ব্যক্তির পাশাপাশি
প্রতিষ্ঠানেরও অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের
চাঁদা নির্ধারণ করে দেবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ।
সুবিধাভোগীরা বছরে ন্যূনতম বার্ষিক জমা নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় তাঁর হিসাব সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে যাবে এবং পরবর্তী সময়ে বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে হিসাব সচল করার সুযোগ থাকবে।
সুবিধাভোগীরা আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে চাঁদা
হিসেবে বাড়তি অর্থ (সর্বনিম্ন ধাপের অতিরিক্ত যেকোনো অঙ্ক) জমা করতে পারবেন।
৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত লভ্যাংশসহ
জমার বিপরীতে নির্ধারিত হারে পেনশন পাবেন গ্রাহকেরা।
নিবন্ধিত চাঁদা জমাকারী পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর
পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে জমাকারীর নমিনি বাকি সময়কালের (মূল জমাকারীর বয়স ৭৫ বছর
পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন পাবেন।
পেনশন কর্মসূচিতে জমা করা অর্থ কোনো পর্যায়ে
এককালীন উত্তোলনের সুযোগ থাকবে না। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমা করা অর্থের
সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে উত্তোলন করা যাবে, যা সুদসহ পরে পরিশোধ করতে হবে।
কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে নিবন্ধিত চাঁদাদানকারী
মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তাঁর নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের
জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে।
এ ব্যবস্থা স্থানান্তরযোগ্য ও সহজগম্য, অর্থাৎ কর্মী চাকরি পরিবর্তন বা স্থান পরিবর্তন করলেও তার অবসর হিসাবের স্থিতি, চাঁদা প্রদান ও অবসরসুবিধা অব্যাহত থাকবে।
নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের ক্ষেত্রে পেনশন কর্মসূচিতে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারে।
তহবিলে জমা করা টাকা নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী বিনিয়োগ করবে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আর্থিক রিটার্ন নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা করবে।
পেনশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যয় নির্বাহ করবে সরকার।
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩, Word & Pdf ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুণ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন