বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩

চাহিদার দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণকারী উপাদান- সত্যের ছায়া

চাহিদার দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণকারী উপাদান একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচিত অধ্যায়। বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারী (কোভিট-১৯)


সহ রাশিয়া উইক্রেন যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম ব্যাপক উঠানামা করছে। নিম্নে চাহিদার উপর ভিত্তি করে দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণকারী উপাদান সমূহ আলোচনা করা হলোঃ

১। বিকল্প সন্ধান- অনেক সময় কোন নির্দিষ্ট পণ্য হাতের নাগালের বাইরে চলে গেলে যেমন মূল্য বৃদ্ধি, সরবরাহ কম, উৎপাদন কম বা উৎপাদন খরচ বেশি হলে বিকল্প সন্ধান করা হয়। এই বিকল্পের সন্ধান চাহিদার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা যায়। অর্থাৎ পণ্যটি আপনার কেমন চাহিদা রয়েছে সেটির উপর ভিত্তি করে আপনি বিকল্প খুঁজতে পারেন।আপনি যদি বিকল্প খুঁজে পান তাহলে স্থিতিস্থাপকতা চলে আসবে। যেমন- আপেলের দাম বাড়লে ভোক্তারা অন্য ফলের সঙ্গে আপেল প্রতিস্থাপন করতে পারেন।  সেক্ষেত্রে পেয়ারা হতে পারে বিকল্প পণ্য। কেননা পেয়ারা দামে সস্তা কিন্তু পুষ্টিগুণে আপেলের সমান।

২। তবে অনেক সময় পণ্যের চাহিদা থাকলেও বিকল্প খুব কম থাকে। অথবা কোন বিকল্প থাকেনা। যদিও পণ্যটি ভোক্তার কাছে অনেক চাহিদা রয়েছে। তা মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিকল্প নেই। যেমন- ইনসুলিন, কোভিড ভ্যাকসিন।

৩। ব্যয়ের অনুপাত- চাহিদা কখনও কখনও একটি ব্যয়ের অনুপাতা বা তার মূল্যের উপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে আবহাওয়া, সস্তা বা সহজ লভ্যতা, ব্যয়বহুলতা ইত্যাদির অর্থাৎ ব্যয়ের অনুপাত চাহিদার উপর দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণ করে থাকে। যেমন- টমেটো এবং গাড়ি।

৪। পণ্যের প্রকৃতি- কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের চাহিদার তুলনায় প্রয়োজনীয় নিত্য পণ্যের চাহিদা অস্থিতিশীল। যেমন- খাদ্য, জল এবং বিদ্যুৎ। নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের চাহিদা সব সময় বাড়ে। এটি সাধারণত ভোক্তার চাহিদার উপর ভিত্তি করে বৃদ্ধি পাবে। এক্ষত্রে অর্থনৈতিক অবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। যেমন মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকলে মৌলিক প্রয়োজনীয় খাদ্যের সাথে Rich Food অর্থাৎ দামী খাদ্যও ক্রয় করে। বিভিন্ন রেসিপি তখন খাদ্য তালিকায় স্থান পায়। কম গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের চাহিদা নিত্য পন্যের চাহিদার চাইতে বেশি স্থিতিস্থাপক যেমন প্রসাধনী, জহরত। তাই পন্যের প্রকৃতি হলো চাহিহদার দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণকারী উপাদান।

৫। আয়ের মাত্রা- উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর লোকেরা দাম পরিবর্তনের প্রতি কম সংবেদনশীল হওয়ার কারণে তাদের অস্থিতিশীল চাহিদা থাকে। তবে নিম্ন আয়ের ভোক্তাদের জন্য একই মূল্য বৃদ্ধি তাদের বাজেটকে প্রভাবিত করবে। যেমন- শার্টের দাম।

৬। সময়ের মাত্রা- মূল্য পরিবর্তনের সময়কাল যত বেশি হবে, চাহিদা তত বেশি স্থিতিস্থাপক হবে। স্বল্পমেয়াদী মূল্য পরিবর্তনের অস্থিতিশীল চাহিদা থাকবে কারণ বিকল্প খোঁজার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই এবং ক্রেতারা এই মূল্য পরিবর্তনগুলিতে কম সাড়া দেয়।

৭। অভ্যাস- সিগারেট ধূমপানকারী এবং মদ্যপানকারীদের জন্য অস্থির চাহিদা থাকবে। এক্ষেত্রে দাম বাড়লেও ব্যাপক চাহিদা থাকে। অভ্যসগত পণ্য সহজলভ্য না হলে মানুষ বিকল্প পন্থা অর্থাৎ চোরাই বা অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে। সুতরাং চাহিদার দামের স্থিতিস্থাপকতা নির্ধারণকারী উপাদান হিসেবে গণ্য।

৮। পরিপূরক পণ্য- যে পণ্যগুলির যৌথ চাহিদা রয়েছে তা স্থিতিস্থাপক। এর একটি উদাহরণ হল কলম এবং কালি। যদি কালির দাম বাড়ে, তাহলে কলমের চাহিদা স্থিতিস্থাপক হবে কারণ আমাদের কালি দরকার একটি কলম ব্যবহার করুন।

৯। প্রায়শই ক্রয় করা পণ্য- যে পণ্যগুলি বেশি ঘন ঘন কেনা হয় যেমন চা এবং চিনির অস্থিতিশীল চাহিদা থাকে। অপর দিকে খুব কমই কেনা পন্যের চাহিদার দামের স্থিসিস্থাপকতা তুলনামূলক বেশি, যেমন- হীরা ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

Proposal for Sale of Commercial Lands- Sotterchaya