মানচিত্র কি?
আয়তাকার বা বর্গাকার কাগজে অংকিত পৃথিবী বা তার অংশের ছোট আকারের প্রতিরূপকে মানচিত্র বলে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আয়তাকার কাগজেই হয়ে থাকে। মানচিত্র হচ্ছে পৃথিবীর বা অঞ্চলের দ্বিমাত্রিক প্রতিরুপ। উদাহরণ স্বরূপ বাংলাদেশের মানচিত্র বা পৃথিবীর মানচিত্র। ভূগোলক হচ্ছে পৃথিবীর প্রকৃত আকৃতির প্রতিরূপ। ইহা ত্রিমাত্রিক। পৃথিবীই ভূগোলকের একমাত্র উদাহরণ। বিভিন্ন বিষয়াবলীর উপর কতকগুলির মানচিত্র একত্রে করে এক সংগে বাধানো বইকে ভূচিত্রাবলী বা Atlas বলে।
চিত্রঃ একটি ডিজটাল মানচিত্র (গুগল থেকে)
মানচিত্রে কি কি উপাদান থাকে?
মানচিত্রে যে সকল উপদান থাকে সেগুলি হলো নিম্নরুপঃ
১। মূল মানচিত্র
২। স্কেল
৩। অভিক্ষেপ
৪। মানত্রিটির উত্তর অবস্থান সাধারণত কাগজের উপরের দিকে থাকতে হবে।
৫। উক্তর দিক নির্দেশক থাকতে (সাধরণত) হবে।
৬। সূচক থাকবে (মানচিত্রের ভিতরে যা আছে তা সূচকেও থাকতে হবে।
৭। মানচিত্রের চারদিকে কাগজের ০.৫ ইঞ্চি হতে ১ ভিতরে বর্ডার লাইন থাকতে হবে।অথচা কাগজের শেষাংশ পর্যন্ত অংকন থাকতে হবে (ফ্লাসকার্ড)
৮। মানচিত্রের বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে সংক্ষিপ্তাকারে মানচিত্রের হেডিং বা নাম ফলক দিতে হবে। যেমন রাজনৈতিক মানচিত্র, প্রাকৃতিক মানচিত্র।
৯। অংক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ চিহ্নিত থাকতে হবে।
১০। মানচিত্রের বর্ডার লাইনের নিচে সূত্র দিতে হবে।
১১। মূল মানচিত্রের চারদিকে (সীমায়) কোন দেশ বা অবস্থান আছে তার নাম দিতে হবে।
মানচিত্র প্রনয়ন পদ্ধতিঃ
(ক) বিভিন্ন পুরাতন মানচিত্র হতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সুবিধাজনক স্কেলে পরিবর্তন করে নতুন মানচিত্র করা হয়।
চিত্রঃ রেনেল কর্তৃক অংকিত ঢাকা শহরের একটি পুরাতন মানচিত্র
(খ) ভূমি জরিপের মাধ্যমে নতুন মানচিত্র করা হয়। ইহাতে চেইন, টেপ, প্লেইন টেবল, কম্পাস লেভেলিং, প্রিজমেটিক কম্পাস, থিয়োডিলাইট প্রভূতি যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
চিত্রঃ স্কেল বেইজ ধরে আঁকা বাংলাদেশের মানচিত্র
(গ)এরিয়াল ফটোগ্রাফঃ এরিয়াল ফটোগ্রাফের মাধ্যমে আকাশ হতে বিমান বা ভূ-উপগ্রহের মাধ্যমে ছবি নিয়ে মানচিত্র করা হয়। তবে এ ব্যবস্থায় সীমানা পাওয়া যাবে না। সীমানা (জেলা আন্তর্জাতিক ইত্যাদি) অন্য মানচিত্র হতে সুপার ইম্পোজ করে নিতে হবে। এই পদ্ধতিতে নদ-নদী, খালবিল, রাস্তা, শস্যক্ষেত্র, বাড়ীঘর ইত্যাদি পাওয়া যায়।এই ব্যবস্থায় কমসময়ে সর্বাধুনিক ও নির্ভুল মানচিত্র তৈরী করা হয়।
(ঘ)
কম্পিউটারের মাধ্যমে: কম্পিউটারের মাধ্যমেও মানচিত্র তেরী করা হয়। এই পদ্ধতিতে কোন
একটি মানচিত্রের সীমানা (বেইজ ম্যাপ) ডিজিটাইজ বা স্কেনারের মাধ্যমে কম্পিউটারে ইনপুট
করে তারপর প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন, স্কেল ও রং পরিবর্তন প্রভূতি
সহজেই করা যায়। ম্যাপ অংকনের কিছু ওয়েব সাইটের তালিকা নিচে দেখুন।
- Click2Map – Corresponds to the industry standard
- Mapme – Universal software for different spheres
- Scribble Maps – Perfect for educational projects
- ZeeMaps – Easy to use
- GmapGIS – Traditional maps
- Maptive – Comes with automated tools
- Carto – Great for stylish maps
- Map Chart – For pro-level mapping
- MapTiler – Delivers powerful performane
- Heatmap Tool – A great choice for heat maps
(তালিকা অনলাইন থেকে সংগৃহীত)
(ঙ)ডিজিটাল ম্যাপিং- ডিজিটাল ম্যাপিং একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও সুর্নিদিষ্ট প্রক্রিয়া, যাতে ভূ-উপগ্রহ থেকে সংগৃহীত তথ্যকে কম্পিউটার বা সুপার কম্পিটারের মাধ্যমে কম্পাইল বা কম্পবাইন্ড করে ফরম্যাটেড ভার্চুয়াল ২ডি বা ৩ডি চিত্র-সংকলন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের সঠিক উপস্থাপনা নিখুত ভাবে উপস্থাপন করা যায়। ডিজিটাল ম্যাপিং প্রযুক্তিতে কোন অঞ্চলের সড়ক, সমস্ত স্থাপনা (৩ডি), প্রধান প্রধান স্থাপনা (চিহ্নিত), ট্রাফিক, ট্রানজিট, ভৌগলিক নির্দেশনা, সাগর, মহা সাগর, স্থানীয় মৌজা নির্দেশনা, পরিবেশীয় উপাদান ইত্যাদি নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ
চিত্র: ডিজিটাল ম্যাপিং, এটি গুগলের ২ডি ডিফল্প ম্যাট
বর্তমানে গুগল ম্যাপ ও গুগল আর্থ বিশ্বব্যাপী প্রধান ডিজিটাল ম্যাপিং প্রযুক্তি। যা প্রতিটি মানুষ কম্পিউটার ও এনড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যর ব্যবহার করতে পারছেন।ডিজিটাল ম্যপিং প্রযুক্তিতে সমস্ত পৃথিবীকে ভূদৃশ্য, উপগ্রহ ও ডিফল্ট আকারে একই সাথে আলাদা আলাদাভাবে উপস্থাপন করা যায়।
চিত্রঃ গুগল স্যাটেলাইটে বাংলাদেশের ম্যাপ। গুগল ম্যাপে গিয়ে জুম করলে আপনি অনেক নির্দেশনা পাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন