অব্যয়ীভাব সমাস বলতে সাধারণত অব্যয়ের অর্থ প্রাধান্য থাকে। অর্থাৎ যে সমাসে অব্যয় পদের অর্থ প্রাধান্য
বজায় থাকবে সে সমাসকে অব্যয়ীভাব সমাস বলা হবে। নিম্নে অব্যয়ীভাব সমাস কাকে বলে এবং অব্যয়ীভাব সমাস চেনার উপায় উদাহরণ সহ আলোচনা করা হলোঃপূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে। অব্যয়ীভাব সমাসে কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমন: জানু পর্যন্ত লম্বিত (পর্যন্ত শব্দের অব্যয় ‘আ’)= আজানুলম্বিত (বাহু), মরণ পর্যন্ত = আমরণ।
অব্যয়ীভাব সমাস চেনার উপায়ঃ
১। সামীপ্য (উপ): কন্ঠের সমীপে= উপকন্ঠ, কূলের সমীপে= উপকূল।
২। বিপ্ সা (অনু, প্রতি): দিন দিন= প্রতি দিন, ক্ষণে ক্ষণে= প্রতিক্ষণে, ক্ষণ ক্ষণ= অনুক্ষণ।
৩। অভাব (নিঃ=নির): আমিষের অভাব= নিরাপমিষ, ভাবনার অভাব= নির্ভাবনা, জলের অভাব= নির্জল, উৎসাহের অভাব= নিরুৎসাহ।
৪। পর্যন্ত (আ): সমুদ্র থেকে হিমাচল পর্যন্ত= আসমুদ্রহিমাচল, পা থেকে মাথা পর্যন্ত= আপাদমস্তক।
৫। সাদৃশ্য (উপ): শহরের সদৃশ= উপশহর, গ্রহের তুল্য= উপগ্রহ, বনের সদৃশ= উপবন।
৬। অনতিক্রম্যতা (যথা): রীতিকে অনতিক্রম না করে= যথারীতি, সাধ্যকে অতিক্রম না করে= যথাসাধ্য। এরূপ-যথাবিধি, যথাযোগ্য ইত্যাদি।
৭। অতিক্রান্ত (উৎ): বেলাকে অতিক্রান্ত= উদ্বেল, শৃঙ্খলাকে অতিক্রান্ত= উচ্ছৃঙ্খল।
৮। বিরোধ (প্রতি): বিরুদ্ধ বাদ= প্রতিবাদ, বিরুদ্ধ কূল= প্রতিকূল।
৯। পশ্চাৎ (অনু): পশ্চাৎ গমন = অনুগমন, পশ্চাৎ ধাবন = অনুধাবন।
১০। ঈষৎ (আ): ইষৎ নত= আনত, ঈষৎ রক্তিম= আরক্তিম।
১১। ক্ষুদ্র অর্থে (উপ): উপগ্রহ, উপনদী।
১২। পূর্ণ বা সমগ্র অর্থে: পরিপূর্ণ, সম্পূর্ণ।
১৩। দূরবর্তী অর্থে (প্র, পর): অক্ষির অগোচরে= পরোক্ষ। এরূপ- প্রপিতামহ।
১৪। প্রতিনিধি অর্থে (প্রতি): প্রতিচ্ছায়া, প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্ব।
১৫। প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থে (প্রতি): প্রতিপক্ষ, প্রত্যুত্তর।
আরো পড়ুন:
বহুব্রীহি সমাস কাকে বলে, বহুব্রীহি সমাস চেনার উপা মাস চেনার উপায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন