পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২

শেয়ার মার্কেট কাকে বলে? শেয়ার মার্কেটের প্রাথমিক পাঠ।

শেয়ার মার্কেট বলতে এমন একটি মার্কেটকে বুঝায় যেখানে ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি  

পুঁজি বাজারে নিবন্ধিত হয়ে আইপিও এর মাধ্যমে জনগণ কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহ করে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তর হয়; শেয়ার মার্কেটে বিণিয়োগকারীগণ তাদের  ধারণ করা প্রাথমিক শেয়ার অন্য কারো কাছে সেকেন্ডারি শেয়ার হিসেবে বিক্রি করতে পারে।  শেয়ার মার্কেট কোম্পানী কর্তৃক জনগণের কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের অনুপাতে বিণিয়োগকারীদের নিকট শেয়ার হস্তান্তর করে। তাছাড়া শেয়ার মার্কেট সেকেন্ডারি শেয়ারকে পরবর্তীতে পোর্টফলিও একাউন্ট ধারীদেরকে ক্রয়-বিক্রয়ের (Buy-Sell) সুযোগ, এবং শেয়ার ম্যানেজমেন্ট, শেয়ার অনুপাতে লভ্যাংশ বন্টন করে থাকে।  

ইউকিপিডিয়ার মতে, শেয়ার বাজার এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন সসীম দায়বদ্ধ কোম্পানি যারা স্টক একচেঞ্জে নিবন্ধিত; তাদের শেয়ার বেচা কেনা করা হয়। একে পুঁজি বাজারও বলা হয়।

দ্যা ইকোনোমিকস টাইম ইন্ডিয়ার মতে, এটি এমন একটি জায়গা যেখানে পাউবিক তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করা হয়। প্রাথমিক বাজার হল যেখানে কোম্পানিগুলি মূলধন বাড়াতে প্রাথমিক পাবলিক অফারে (আইপিও) সাধারণ জনগণের কাছে শেয়ার ভাসিয়ে দেয়।

প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) বা Initial public offering (IPO): প্রাথমিক গণ-প্রস্তব (আইপিও) হচ্ছে একটি একটি অতালিকাভুক্ত কোম্পানী একচেঞ্চ স্টোক এর মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়ে তাদের ধারণ করা শেয়ারগুলো নির্দিষ্ট অর্থে সাধারণ ও প্রতিষ্ঠানিক বিণিয়োগকারীদের কাছে স্টক আকারে বিক্রি করে পাবলিক কোম্পানীতে রুপান্তর হওয়ারকে বুঝায়।

আইপিও এর লক্ষ্যঃ প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) বা Initial public offering (IPO) প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করে মূলধন বৃদ্ধি করা। তাছাড়া আইপিও এটি কোম্পানির ব্যান্ডব্যালু, মার্কেটে টিকে থাকার যোগ্যতা, বাজার সক্ষমতা  বাড়াতে সহায়তা করে।

কারা আইপিওতে আবেদন করতে পারেঃ বাংলাদেশের স্টক একচেঞ্জ (Bangladesh Stock Exchange) বা পুঁজি বাজারে তিন ধরণের বিণিয়োগকারীরা আইপিওতে আবেদন করতে পারেন। এই তিন ধরণের বিণিয়োগকারী হলেন; (ক) সাধারণ বিণিয়োগকারী, এই বিণিয়োগকারী আবার দুই ধরণের ১, নিবাসী বিণিয়োগকারী, ২. প্রবাসী বিণিয়োগকারী। (খ) প্রাতিষ্ঠানিক বিণিয়োগকারী। ঢাকা ও চট্টগ্রাম পুঁজি বাজারে আইপিওতে আবেদনকৃত শেয়ার বিণিয়োগকারীদের জন্য তিনটি কেটা হিসেবে বন্টন করে থাকেন। এই বন্টনে সাধারণ বিণিয়োগকারীরা সবচেয়ে কম সংখ্যক শেয়ার পেয়ে থাকেন। যেমন উদাহরণ স্বরুপ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ইলেক্ট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম (ইএসএস) এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রো-রাটার (Pro-rata) ভিত্তিতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে সাধারণ নিবাসী বিণিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৫০টি শেয়ার, প্রবাসীরা পেয়েছেন ১৮৮টি শেয়ার।

প্রাইমারী শেয়ার (Primary Share): একটি কোম্পানী যখন শেয়ার মার্কেটে লিস্টেট (নাম তালিকাভুক্তি) করতে চায় তখন তাকে সিকিউরিটি এক্সচেঞ্চ কমিশনে নিবন্ধন করে কোম্পানীর ধারণকৃত শেয়ার নির্দিষ্ট অভিহিত দরের সাথে প্রিমিয়াম যুক্ত একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিণিয়োগকারীরেদর মধ্যে বন্টন করে দেয়। এই বন্টনকৃত শেয়ারকে প্রাইমারী শেয়ার বা প্রাথমিক শেয়ার বলে। যদি বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্চ অনুমোদ দেয় তাহলে কোম্পানীটি মার্কেটে শেয়ার ছেড়ে বিণিয়োগকারীদের নিকট থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে পারে। মুলধণ সংগ্রহ করার জন্য কোম্পানী যে আবেদন আহব্বান করে তাকে বলা হয় আইপিও (IPO: Initial Public Offer)।

এখানে, অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু হচ্ছে শেয়ারের মূল দাম। কোন শেয়ারের অভিহিত মল্য যদি ১০ টাকা হয় আর যদি সে শেয়ার পুঁজি বাজরে ১০০ টাকাও কেনা বেচা চলে তবুও অভিহিত মূল্য ১০ টাকার উপর ভিত্তি করে ডিভিডেন্ড (লভ্যাংশ) প্রদান করা হয়।

সেকেন্ডারী শেয়ার (Secondary Share):  একটি কোম্পানী পুঁজি বাজারে নিবন্ধণ করে আইপিও এর মাধ্যমে বিণিয়োগকারীদের মধ্যে লটারীর মাধ্যমে শেয়ার বন্টন করে দেয়। বিণিয়োগকারীরা যখন উক্ত শেয়ার পুঁজি বাজারের মাধ্যমে অন্য কোন বিণিয়োগ কারীর নিকট বিক্রি করে দেয় তখন সেই প্রাথমিক শেয়ারটি সেকেন্ডারী শেয়ার হিসেবে অভিহিত করা হয়। কোন কোম্পানীর আইপিওর মাধ্যমে বরাদ্ধকৃত শেয়ারটি যখন এক বিণিয়োগকারী থেকে অন্য বিণিয়োগকারী কিনে নেয় তাকে সেকেন্ডারী শেয়ার বলে।

সেকেন্ডারী শেয়ার কিনে বিণিয়োগ করা অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয়, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো শেয়ার মার্কেটে। সেকেন্ডারী শেয়ারে বিণিয়োগ করতে গেলে আপনাকে কোম্পানীর মূলধণ, ব্যান্ড ভ্যালু, মার্কেট পরিচালন ব্যবস্থা, কোম্পানীর ব্যবস্থাপক, মার্কেটে পণ্য বা সেবার ভ্যালু, কোম্পানী ক্যাটাগরি, বিণিয়োগকারীদের কি পরিমান ডিভিডেন্ড প্রদান করে, বোনাস শেয়ারের পরিমাণ, পিই রেশিও ইত্যাদি দেথতে হবে।

লভ্যাংসের সূত্রঃ ধরুণ কখগ একটি কোম্পানী, কোম্পানীটি এবছর ৩০% লভ্যাংস ঘোষণা করেছে। কোম্পানীর শেয়ারটি ফেসভ্যালু ১০ টাকা এবং মাকেট দর ৩০ টাকা। তাহলে উক্ত শেয়ারটির বাৎসরিক ডিভিডেন্ড দিবে (ডিভিন্ডে%  ফেসভ্যালু  মার্কেট দর  ১০০)= ১০%। একটি কোম্পানীর সেকেন্ডারী শেয়ার ক্রয় করার আগে কোম্পানীটির ইপিএস, ব্যবসা, নেট প্রোফিট মারজিন  বাড়ছে কিনা দেখতে হবে। একটি কোম্পানীর শেয়ারের পিছনে সমুদয় অর্থ বিণিয়োগ না করে বিভি্ন্ন কোম্পানীতে বিণিয়োগ করতে হবে, তেমনি একই সেক্টরের কোম্পানীর শেয়ার ক্রয় না করে বিভিন্ন সেক্টরের শেয়ার ক্রয় করতে হবে। এতে একটি ফ্রন্টে লস খেলেও অন্য ফ্রন্টে লাভ করতে পারবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন