বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২

ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে ঘাম কি নাপাক?

ঘাম কি নাপাক?
স্বাভাবিক অবস্থায় ঘাম পাক, তবে ঘামের সাথে কোন অপবিত্র বস্তু (তরল পদার্থ বা যে ধরণের অপবিত্র বস্তু হউক না কেন) মিশ্রণ ঘটলে তা নাপাক হয়ে যাবে।

ব্যাখ্যাঃ ঘাম পাক না নাপাক তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে কোন কিছু  পাক নাপাকের বিষয়ে কোরআন হাদিস কি বলে, যদি কোরআন হাদিসে কোন দলিল না পাওয়া যায় তাহলে ইজমা ও কিয়াস কি বলে। এখন আসুন ঘামের ব্যাপারে-

(ক) ‍কুরআনঃ ঘামের ব্যাপারে সরাসরি ‍পবিত্র কুরআনে কোন নির্দেশনা নেই।

(খ) হাদিসঃ ঘামের ব্যাপারে পবিত্র হাদিসে এসেছে- আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদীনার এক রাস্তায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আমার সাক্ষাত হয়। আমি তখন নাপাক অবস্থায় ছিলাম। তাই আমি পিছনে হটে গিয়ে গোসল করে আসলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ হুরাইরাহ্! তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে? আমি বললাম, আমি নাপাক ছিলাম বিধায় অপবিত্র অবস্থায় আপনার সাথে বসা অপছন্দ করলাম। তিনি বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! মুসলমান (কখনো) অপবিত্র হয় না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ গোসল, অনুঃ জুনুবী ব্যক্তির ঘাম, নিশ্চয় মুসলিম অপবিত্র নয়, হাঃ ৩৮৩), মুসলিম (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ মুসলমান অপবিত্র হয় না তার প্রমাণ)
আল-জামি‘উস সাগীর ৬১১৭, ইরওয়া ১৯৩,আবু দাউদ ২৩১)। সূত্র (যেখান থেকে হাদিস নিয়েছি)

উপরোক্ত হাদিস থেকে প্রমানিত হয়েছে যে, মানুষ যখন অপবিত্র অবস্থায় যেমন, সহবাসের পর, কিংবা স্বপ্নদোষের পর যখন ঘেমে যাবে সেই ঘাম যদি অন্য কোন ব্যক্তির শরীলে কিংবা কাপড়ে কিংবা খাদ্য দ্রব্যে লেগে যায় তাহলে সেই ব্যক্তি, কাপড় কিংবা খাদ্য দ্রব্য অপবিত্র হবে না। তবে শর্ত থাকে যে ঘাম যেন বীর্যের সাথে মিশ্রণ না ঘটে অথবা ঘাম যেন কোন অপবিত্র বস্তুর সাথে মিশ্রণ না ঘটে।

স্বাভাবিক অবস্থায় ঘাম নাপাক নয়, অর্থাৎ মানুষ যখন পবিত্র অবস্থায় অথবা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে তখন ঘাম নাপাক নয়। ঘামানো অবস্থায় সে সকল ধরণের ইবাদত করতে পারবেন। কেউ যদি ফরয গোসল করার পর ঘেমে যায় তাহলে তার জন্য গোসল করা প্রয়োজন নেই। কিংবা অযু করার পর ঘেমে গেল পুনরায় অযূ করার প্রয়োজন নেই, যতক্ষণ না তার অযূ; অযু ভাঙ্গার কারণে ভেঙ্গে যায়।

ঘামযুক্ত কাপড় দ্বারা আপনি নামাজ পড়তে পারবেন, তবে কাপড় যদি ঘেমে দুর্গন্ধ   হয়ে যায় সেই কাপড় পড়ে নামাজ পড়া মাকরূহ। আপনি কি চান আপনার প্রভুর নিকট দুর্গন্ধ যুক্ত কাপড় নিয়ে উপস্থিত হতে? তবে একান্তই যদি অন্য কোন কাপড়ের ব্যবস্থা না থাকে তাহলে দুর্গন্ধ যুক্ত কাপড় দিয়ে নামাজ পড়তে পারবেন।


পরিশেষে, মানুষের ঘাম পাক,  যেহেতু ঘামানো পিছনে মানুষের কোন হাত নেই, মানুষ চায়না সে ঘামাক, কিন্তু পরিশ্রম, অধিক তাপমাত্রা কিংবা অসুখের কারণে ঘেমে যায়। সুতরাং যেহেতু মানুষের হাত নেই এখানে তাকে নামাক সাব্যস্ত করার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া কোরআন, হাদিস যাকে নাপাক ঘোষণা করেনি সেখানে আমি আপনি কে? তাই ঘাম যদি কোন নাপাক তরলের সাথে লাগে তাহলে যেটুকু লেগেছে সেটুকু ধুঁয়ে ফেললেই হবে।

লেখকঃ সত্যের ছায়া জালালপুরী।





আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

Proposal for Sale of Commercial Lands- Sotterchaya