রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২

ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার লক্ষণ, চিকিৎসা ও ঔষধের নাম- Sotterchaya

ডায়রিয়া (Diarrhea) ডায়রিয়া একটি ইংরেজী শব্দ। যার বাংলা শাব্দিক অর্থ হলো-

বদহজম, উদরাময়, পেট খারাপ, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি। পরিভাষায়- ডায়রিয়া হলো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী বা বদহজমের যেকোন সমস্যায় গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এর সংক্রমণের একটি  অবস্থা যেখানে অন্ত্র থেকে মল তরল আকারে বারবার বের হতে থাকে এবং শরীরে পানিশূণ্যতা সৃষ্টি করে।


ডায়রিয়ার কারণঃ ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে, তবে মেজর বা প্রধান কারণ হলো- অন্ত্রে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবীর আক্রমণ এবং খাবারের মাধ্যমে পেটে বদহজম।

ডায়রিয়ার লক্ষণঃ ডায়রিয়ার মূল লক্ষণ হলো পেটে মোচর বা কামড় দিয়ে বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া বা মল ত্যাগ করা, মল অন্ত্রে আটকাতে না পারা, বমি বমি ভাব আসা, কখনো বমি করা (শিশুদের ক্ষেত্রে), কখনো কখনো মলের সাথে রক্ত যেতে পারে, শরীল দুর্বল ক্লান্তি লাগা, মল ত্যাগের পর গলা শুকিয়ে যাওয়া। শিশুরা মল ত্যাগ ও বমি করার পরে ফ্যাল ফ্যাল করি তাকিয়ে থাকে।

ডায়রিয়া চিকিৎসাঃ ডায়রিয়া হলে দুই ভাবে চিকিৎসা করা যায়- এক. ঘরোয়া চিকিৎসা, দুই. ক্লিনিক্যাল বা ডাক্তারী চিকিসা।

ঘরোয়া চিকিৎসাঃ ডায়রিয়ার ঘরোয়া চিকিৎসা সেই প্রাচীন আমল থেকে চলে আসছে। ঘরোয়া চিকিৎসায় সাধারণত থানকুনি পাতার রস খাওয়ানো হতো, এর সাথে ভাতের মাড়, ডাবের পানি, কাঁচ কলা সিদ্ধা ইত্যাদি খাওয়ানো প্রসিদ্ধ ছিলো। এই খাবারগুলো ডায়রিয়াকে সীমিত মাত্রায় প্রতিরোধ ও পানি শূণ্যতা দূর করতে পারলেও ব্যাপক ও তীব্র মাত্রায় ডায়রিয়ায় এগুলো কোন কাজে আসত না। তবে প্রাচীন চিকিৎসা পথ্যের সাথে নতুন একটি অনুষঙ্গ পথ্য (ওষুধ) যোগ হয়েছে তা হলো খাবার স্যালাইন। খাবার স্যালাইন ডায়রিয়ার নিরাময় করতে না পারলেও পানি শূণ্যতা প্রায় শতভাগ পূরণ করতে পারে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর বিভিন্ন ব্যান্ডের স্যালাইন পাওয়া যায়, তার মধ্যে এসএমসি কোম্পানীর ওর স্যালাইন-এন বিখ্যাত। ইহা ছাড়াও স্কয়্যার ফার্মার ‍সস স্যালাইন, এসিআই কোম্পানীর এসিআই ওআরএস, একমি ল্যাবরেটরিজ লিঃ এর একমি’স ওআরএ ইত্যাদি পরিচিত। খাবার স্যালাইন যদি হাতের কাছে না পাওয়া যায়, অথবা ওষুধের দোকান যদি দূরবর্তী স্থানে থাকে তাহলে আপনি চাইলে ঘরেও খাবার স্যালাইন তৈরী করতে পারবেন। খাবার স্যালাইন তৈরির ফর্মূলা হলো- আধালিটার পানি+এক চিমটি লবন+এক মুঠো গুড় বা চিনি= খাবার স্যালাইন। প্রণালীঃ  আধা লিটার বিশুদ্ধ পানি নিন, ঘরে বিশুদ্ধ পানি না থাকলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। তারপর  পানির সাথে এক চিমটি লবন ও এক মুঠো গুড় মিশিয়ে ভালো করে নাড়ুন। বেশ হয়ে গেল খাবার স্যালাইন।

পথ্য চিকিৎসাঃ ডায়রিয়ার বহুল প্রচলিত ওষুধের নাম হলো লোপেরামাইড হাইড্রোক্লোইড জাতীয় গ্রুপের ওষুধ যেমন ইমোটিল , লোপেরিনলোপামিড ইত্যাদি। ইহা ছাড়াও বাজারে মেট্রোনিডাজল গ্রুপের ওষুধ ফ্লাজিল-৪০০এমোডিস-৪০০ফিলমেট-৪০০ ব্যাপক পরিচিত। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে ডাক্তারা  সাধারনত লোপেরামাইড হাইড্রোক্লোইড অথবা মেট্রোনিডাজল গ্রুপের ওষুধের সাথে সিপ্রোফ্লক্সাসিন বা অ্যাজিথ্রোমাইসিন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন এবং খাবার স্যালাইন এর সাথে স্বাভাবিক খাবার চালিয়ে যেতে বলেন। রোগীকে এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে নিবেন।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঃ ডায়রিয়ার প্রাথমিক অবস্থায় খাবার স্যালাইন ও লোপেরামাইড হাইড্রোক্লোইড অথবা মেট্রোনিডাজল গ্রুপের ওষুধে খেলে ভালো হয়ে যায়। যদি দেখেন রোগী বারবার পাতলা পায়খানার সাথে বমি করছে তাহলে তারাতাড়ি নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্যকেন্দ্রে ভর্তি করুণ এবং স্বাভাবিক খাবার চালিয়ে যান। শিশুকে কখনো বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করবেন না। শিশুর ডায়রিয়া হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Recent Post

DECLARATION ABOUT OVERDUE CLASSIFIED LIABILITY & MORTGAGE

DECLARATION ABOUT OVERDUE CLASSIFIED LIABILITY & MORTGAGE