তদন্ত কমিটি বলতে কোন অজ্ঞাত বিষয় অনুসন্ধানের জন্য আইগত ভিত্তিতে সংশিষ্ট বিষয় যেমন অপরাধ, অস্বাভাবিক ঘটনা, সমস্যা, অভিযোগ, প্রতিবন্ধকতা, ব্যর্থতা, দায়িত্বহীনতা,
কোন কিছু থেকে বিচ্যুতি , পরাজয়, বিবাদমান স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কেইস, ইত্যাদির সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোকদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি বা দলকে বুঝায়।
তদন্ত কমিটি এককটি স্থায়ী বা বিশেষ কমিটি অথবা আইনসভার কমিটি যা কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয়, যাদের প্রধান উদ্দেশ্য হলো তথ্য সুরক্ষিত করে সাক্ষীদের উপস্থিত জেরা থেকে প্রাপ্ত, নথি, কাগজপত্র এবং আলামতের ভিত্তিতে গোপন বিষয় অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন বা রিপোর্ট তৈরি এবং দাখিল করা।
(১) সাধারণ বিধানঃ তদন্ত কমিটি গঠন করতে হলে আইন অনুযায়ী গঠণ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় অপরাধ বা বিষয়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় আইন ধারা গঠণ করতে হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কোন বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করলে প্রথমে দেখতে হবে সে প্রতিষ্ঠানের তদন্ত কমিটি গঠন বিষয়ক কোন আইন আছে কিনা। যদি আইন থেকে থাকে তাহলে সেই আইন অনুযায়ী গঠন করবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন অবশ্যই রাষ্ট্রীয় আইনের পরিপন্থি না হয়।
নিয়ম গ্রহণ: প্রতিটি তদন্ত কমিটি বিধিবদ্ধ নিয়ম গ্রহণ করবে, কোনো আইন বা আইনসভার নিয়মের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন আইন গ্রহণ করবে, শুনানির পরিচালনা সহ সমস্ত ধাপগুলো আইনি কাঠামো পরিচালিত হবে।
(২) কমিটি
গঠন বা বিন্যাসঃ এই পর্যায়ে এসে আইনগত ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটি তিন সদস্য থেকে পাঁচ সদস্য হতে পারে। তরে বিজোড় সংখ্যা থাকা বাঞ্চনীয়। কেননা কোন বিষয়ে সমাধানে পৌছাতে না পারলে তখন তদন্ত কমিটি নিজেদের মধ্যে সংখ্যাধিক্য মতামত নিয়ে থাকে। একটি তদন্ত কমিটি গঠনের রেজ্যিলোশন, সংবিধিতে কমিটির গঠনের উদ্দেশ্য, অ র্পিত ক্ষমতা, দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং মেয়াদ, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের বিষয়বস্তু এবং সুযোগ সুবিধা এবং এর সদস্যদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।
অর্থ এবং কর্মী: প্রতিটি তদন্ত কমিটি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পেশাদারিত্বের সাথে যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, কারিগরি, কেরানি বা অন্যান্য কর্মী নিয়োগ করতে পারে। তদন্ত চলাকালীন সময়ে উপলব্ধ তহবিলের পরিমাণ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন ও পাশ করে নিতে পারবে।
কমিটিরসদস্যপদ, কোরাম এবং ভোটিংঃ
(ক) একটি তদন্ত কমিটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক কমপক্ষে তিন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
(খ) তদন্ত কমিটি যদি অধিক সংখ্যক হয়, আর যদি চেইন অব কমান্ড নিয়ে আপত্তি থাকে তাহলে তাদের মধ্যে থেকে একটি কোরাম গঠন করতে পারবে। একটি কোরাম কমিটির মোট অনুমোদিত সদস্য সংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ নিয়ে গঠিত হবে।
(গ) যদি কোরাম গঠিত হয় এবং গঠিত হওয়ার পর যদি কোরাম উপস্থিত না থাকলে কোনো সভায় কমিটি কর্তৃক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। কেননা কোরামই এখানে সংখ্যাধিক্য মতামত প্রদান করতে সক্ষম। যদি কোরামের আপত্তি না থাকে তাহলে কমিটির চেইন অব কমান্ড দ্বারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে। অথবা কমিটি উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে কাজ করতে পারে।
(৩) উদ্দেশ্য: এই উদ্দেশ্য হল আইনী তদন্ত কমিটি পরিচালনার পদ্ধতি স্থাপন করা, এই ধরনের কমিটি গঠন ও পরিচালনার ব্যবস্থা করা যাতে তারা তাদের উপর অর্পিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হয়, যার মধ্যে শুনানি পরিচালনা করা সহ ন্যায্য এবং নিরপেক্ষ পদ্ধতিতে, এই ধরনের শুনানিতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা ব্যক্তিদের অধিকারের সুরক্ষা এবং জনকল্যাণ সংরক্ষণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সাক্ষীদের নোটিশ: তদন্ত
চলাকালীণ সময়ে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সাক্ষীদের নোটিশ প্রদান করতে হবে।
(৪) শুনানিঃ "শুনানি" অর্থ তদন্তের প্রক্রিয়া চলাকালীন যে কোনো বৈঠক, প্রাথমিক সম্মেলন বা সাক্ষাৎকার ব্যতীত যেখানে শপথের অধীনে কোনো সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় না, সাক্ষ্য গ্রহণ বা অন্যান্য প্রমাণ গ্রহণের উদ্দেশ্যে একটি তদন্ত কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়। শুনানি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত বা জনসাধারণের জন্য বন্ধ হতে পারে। তদন্ত বিষয়ের উপর পাঠ শুনানি অনুষ্ঠানকে বুঝায়। "পাবলিক শুনানি" অর্থ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কোনো শুনানি, বা যার কার্যক্রম জনসাধারণের জন্য উপলব্ধ করা হয়। একটি তদন্ত কমিটি তার দায়িত্ব পালনের জন্য উপযুক্ত শুনানি করতে পারে, কমিটি নির্ধারিত সময়ে এবং স্থানে।
(৪) প্রয়োগ এবং শাস্তি: তদন্ত রিপোর্টের সুপারিশ আইনগত প্রয়োগ এবং সেই অনুযায়ী দোষীদের শাস্তিকে নির্দেশ করে।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন