Relation between Values Education and Good GovernanceGovernance.
সমাজ জীবনের মানুষের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত আচার ব্যবহার ও কর্মকাণ্ড যেসব নীতিমালার মাধ্যমে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাদের সমষ্টিকে মূল্যবোধ বলে। আর মূল্যবোধ শিক্ষা হচ্ছে শিষ্টাচার, সততা, ন্যায়পরায়ণত, সহনশীলতা, সহমর্মিতাবোধ, শৃঙ্খলাবোধ ও সৌজন্যবোধ সুকুমার বৃত্তি বা মানবীয় গুণাবলীর শিক্ষা। মূল্যবোধ শিক্ষার সাথে সুশাসনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে । প্রভৃতি এগুলো নিম্নরূপ :
কর্তব্যবোধ মূল্যবোধের অন্যতম উপাদান, কর্তব্যবোধ না থাকলে সুশাসনও প্রতিষ্ঠিত হয় না। এজন্যই সচেতনতা ও কর্তব্যবোধকে নাগরিকের অন্যতম গুণ বলা হয়। জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতাকে যেমন সুশাসনের বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করা হয় তেমনি তা মূল্যবোধেরও আবশ্যকীয় উপাদান মনে করা হয় ।
সামাজিক জীব হিসেব মানুষকে সুস্থ , স্বাভাবিক ও
জীবন যাপন করা— মূল্যবোধ ও সুশাসন উভয়েরই লক্ষ্য। মূল্যবোধ শিক্ষা ও সুশাসনের ধারণা পরস্পরের পরিপূরক। মূল্যবোধের যথার্থ উপস্থিতি ব্যতিরেকে রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়— সুশাসন। মূল্যবোধ শিক্ষা ব্যক্তিকে দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলার মাধ্যমে—সুশাসনের ভিতকে মজবুত করে । বিশ্বব্যাপী শান্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন— মূল্যবোধ শিক্ষার ।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সুশাসনের অন্যতম প্রধান উপাদান , আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে— মূল্যবোধ শিক্ষা । আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় জীবনে যে ক্ষত বা অবক্ষয়ের সূচনা হয়েছে তা থেকে মানব জাতিকে রক্ষা করতে পারে মূল্যবোধ শিক্ষা । রাষ্ট্রনায়কদের মূল্যবোধের অভাব থাকলে কখনো সম্ভব হয় না— সুশাসন প্রতিষ্ঠা । মূল্যবোধ শিক্ষা মানুষের নৈতিক গুণাবলী জাগ্রত ও বিকশিত করতে সাহায্য করে । আর নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠা ছাড়া সুশাসন কাল্পনিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । সুশাসন ও মূল্যবোধ শিক্ষার ধারণা উভয়ই— মানবজাতির জন্য ইতিবাচক । সরকার ও রাষ্ট্রীয় জনকল্যাণমুখীতা উভয়ই —– মূল্যবোধ ও সুশাসনের উপাদান । আইনের শাসন শক্তিশালী করে— গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ।
General Perception of Values Education and Good Governance ( মূল্যবোধ শিক্ষা এবং সুশাসন সম্পর্কে সাধারণ ধারণা )
মূল্যবোধ শিক্ষা সম্পর্কে সাধারণ ধারণা মূল্যবোধ শিক্ষা সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণা গ্রামীণ, শহরে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছুটা ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। গ্রামীণ ধারণা অনুযায়ী যে শিক্ষার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ সমাজে প্রচলিত রীতিনীতি, প্রথা, আদর্শ ইত্যাদির বিকাশ ঘটে তাই হল মূল্যবোধ শিক্ষা। শহরের মূল্যবোধের ধারণায় গ্রামের প্রচলিত আদর্শিক ধ্যান ধারণার পরিবর্তে আধুনিকতার উপাদানসমূহকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রচলিত অর্থে আন্তর্জাতিক মূল্যবোধ বলতে আমরা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি, ধ্যান - ধারণা তথা বিশ্বজনীন বোধের আদর্শিক দিককেই বুঝে থাকি। গ্রামীণ ধারণা অনুযায়ী- যে শিক্ষার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ সমাজে প্রচলিত রীতিনীতি প্রথা, আদর্শ ইত্যাদির বিকাশ ঘটে তাই হলো— মূল্যবোধ শিক্ষা। গ্রামীণ ধারণা অনুযায়ী- শারীরিক , স্বাস্থ্য , মানসিক, পরিচ্ছন্নতা, সমাজে প্রচলিত আদব - কায়দা ও আচরণ, নৈতিকতার উন্নয়ন, ধর্মীয় আদর্শের বিকাশ ইত্যাদি মূল্যবোধ শিক্ষার লক্ষ্য। বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান, অনুষ্ঠান, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী— মূল্যবোধ শিক্ষা লাভ করে। গ্রামীণ মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে— মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ইত্যাদি। গ্রামীণ ধারণা অনুযায়ী মূল্যবোধ শিক্ষা বলতে বুঝায়— নৈতিক শিক্ষাকে ।
আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ , বিদেশী সংস্কৃতির প্রভাব ইত্যাদির দ্বারা শহরের মূল্যবোধের ধারণা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয় । শহরের মানুষের মূল্যবোধ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন , সভা - সমিতি, সেমিনার ইত্যাদি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বব্যাপী মূল্যবোধের অবক্ষয় নিরসনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে- মূল্যবোধ শিক্ষার প্রসারকে। নৈতিকতার সংকট , ব্যক্তিস্বার্থ বোধের প্রাধান্য, পারিবারিক ও সামাজিক ভূমিকার শৈথিল্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর অধিক নির্ভরশীলতা, বৈদেশিক অপসংস্কৃতির প্রভাব ইত্যাদি—মূল্যবোধের অবক্ষয়ের নিয়ামক শক্তিস্বরূপ। রাখছে— আকাশ সংস্কৃতি। বর্তমানে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয় সৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বৈদেশিক আকাশ সাংস্কৃতি, ইন্টারনেটে নীল ছবির সহজ লভ্যতা, পণ্যগ্রাফি ইত্যাদি।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন