পৃষ্ঠাসমূহ

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

সুশাসনের উপাদান ও উপাদান সমূহ সমাজে প্রতিষ্ঠা করার উপায় এবং এ সম্পর্কিত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বাবলী।

সুশাসনের উপাদান: সুশাসনের ধারণাটি বিশ্বব্যাংকের এক প্রকাশনির মাধ্যমে পরিচিত লাভ করে ১৯৮৯ সালে। সুশাসনের অভাবে সততা সাথে ভোট প্রদান ও প্রার্থী বাছাই, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাজে অংশগ্রহণ সম্ভব হয় না । 
UNDP সুশাসন নিশ্চিত করতে যে ৯ টি উপাদান উল্লেখ করেছে তা হলোঃ
১. সমঅংশীদারিত্ব।
২. আইনের শাসন। 
৩. স্বচ্ছতা। 
৪. সংবেদনশীলতা।
৫. সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের প্রাধান্য। 
৬. সমতা ও ন্যায্যতা।
৭. কার্যকারিতা ও দক্ষতা। 
৮। জবাবদিহিতা।
৯. কৌশলগত লক্ষ্য।

প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক কোটিল্য তার অর্থশাস্ত্র গ্রন্থে বলেছেন– সুশাসনের চারটি উপাদানের কথা। IDA সুশাসনের চারটি উপাদানের কথা উল্লেখ করেছে। যথা : জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা, আইনের শাসন ও অংশগ্রহণ। 

জাতিসংঘ সুশাসনের ৮ টি উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করেছে। নিচের তা উল্লেখ করা হলো-
সুশাসনঃ
১। মতামতের উপর নির্ভরশীল।
২। দায়বদ্ধতা।
৩। অংশগ্রহণমূলক।
৪। কার্যকর ও দক্ষ প্রশাসন।
৫। আইনের শাসনের অনুসারী।
৬। স্বচ্ছতা।
৭। জবাবদিহিতা
৮। ন্যায় বিচার প্রবণ

AFDB ( আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ) সুশাসনের ৫ টি উপাদান উল্লেখ করে: 
ক. জবাবদিহিতা 
খ.স্বচ্ছতা (Transparency) 
গ. দুর্নীতি দমন (Combating Corruption )
ঘ. অংশগ্রহণ(Participation)
ঙ.আইন ও বিচার বিভাগীয় সংস্করণ (Legal and judicial Reforms )

কোনো দেশের শাসন ব্যবস্থাকে সুশাসন বলতে হলে ঐ দেশের শাসন ব্যবস্থায় অবশ্যই এই ৮ টি উপাদানের সমাবেশ থাকতে হবে । জাতিসংঘ চিহ্নিত ৮ টি উপাদান ছাড়াও সুশাসনের আরও যেসব উপাদানের কথা বলা হয় সেগুলো হলো— নীতি ও ঔচিত্যবোধ, সহজশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, শ্রমের মর্যাদা, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রশাসনিক দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা, আত্মনির্ভরশীলতা, স্বাধীন গণমাধ্যম, অবাধ তথ্য প্রবাহ, সুযোগের সমতা, দুর্নীতি মুক্ততা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, শক্তিশালী বিরোধী দল ইত্যাদি। আইনের শাসনের জন্য প্রয়োজন— ন্যায়পরায়ণ আচরণ, নিপীড়নমুক্ত স্বাধীন পরিবেশ এবং নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বিচার বিভাগ। রাজনীতিতে সামরিক হস্তক্ষেপ দেখা দেয়— এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায়। 

গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলাহয় সামরিক শাসনে।

আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার সুযোগ বিনষ্ট হয়— বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অভাবে। 
সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোতে স্থানীয় সরকার কাঠামো— খুবই দুর্বল ও অকার্যকর।

সুশাসনের জন্য প্রয়োজন স্বাধীন ও শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম।

মানবাধিকার রক্ষা, মৌলিক অধিকার উপভোগের অনুকূল পরিবেশ রক্ষা , জবাবদিহিতা কার্যকর করা, প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়— স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম ছাড়া।

আইনের শাসনের প্রবৃত্তিগুলো হলো— শাসকের ন্যায়পরায়ণ আচরণ, নিপীড়নমুক্ত স্বাধীন পরিবেশ ও আইনের শাসনের উপযুক্ত পরিবেশ। 
নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারগুলো অর্থহীন হয়ে পড়ে অর্থনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা না থাকলে। 

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের আচরণ হবে— দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক।
 
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন— সংবিধান।

আইনের শাসন না থাকলে বাধাগ্রস্ত হয় – সুশাসন । 
সুশাসনের অন্যতম অন্তরায়— রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব ।

সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে অন্যতম বাধা— স্বজনপ্রীতি।

জনগণের অধিকার রক্ষার রক্ষাকবচ- আইনের শাসন। 

আইনের শাসনের অর্থ— সকলেই আইনের অধীন। 

সামাজিক বৈষম্য এবং ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি করে— দুর্নীতি। 

অংশগ্রহণমূলক শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়– সুশাসন।

সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত— কার্যকর গণতন্ত্র। 

উৎকৃষ্ট নাগরিক জীবন গড়ে তোলা সম্ভব নয়- আইনের শাসনের উপস্থিতি ছাড়া।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলো— গণতন্ত্রের প্রাণ। 

স্থিতিশীল, ন্যায়ভিত্তিক এবং দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে– সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে। 

দুর্নীতিরোধ ও দারিদ্র্য বিমোচন হলো— অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য। 

নাগরিকদের সাধারণ ইচ্ছার প্রতিফল ঘটে— গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায়। 

দুর্নীতিরোধ করতে সুশাসনের জন্য প্রয়োজন— স্বচ্ছতা। 

দুর্নীতি বৃদ্ধি, উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত ও সমাজে অগ্রজদের দাপট বেড়ে যায়— দুর্নীতির বিচার না হলে। 

রাষ্ট্র এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের নির্দেশক– সুশাসন। 

দুর্নীতি , রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অদক্ষ নেতৃত্ব হলো— সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। 

গণতন্ত্রকে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করে — সুশাসন। 

TERT বিচার বিভাগের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ হলো— সুশাসনের বড় সমস্যা। 

‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্যের সমার্থক— গতানুগতিক আমলাতন্ত্রের। 

দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করতে পারে — ই - গভর্নেন্স। 

সরকার ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর করে – ই- গর্ভনেন্স। 

আমলারা জনসেবক হয়েও প্রভুর মত আচরণ করেন জন অসচেতনার কারণে। 

সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে প্রতিষ্ঠিত হবে— স্থিতিশীল , ন্যায়ভিত্তিক ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ।

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো— দুর্নীতিরোধ, দারিদ্র্য বিমোচন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ।

ন্যায়পাল পদ্ধতি, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে— সুশাসন প্রতিষ্ঠায়।

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অধিক কার্যকর করা প্রয়োজন— স্থানীয় সরকার। 

সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ নয় যে মূল্যবোধ— সৃজনশীলতা। 

সরকারি চাকুরিতে সততার মাপকাঠি হচ্ছে — নির্মোহ ও নিরপক্ষভাবে অর্পিত দায়িত্ব যথাবিধি পালন করা।
 ******

এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন