পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩

মৌলবাদ কাকে বলে? ইসলাম ও মৌলবাদ কি একই সূত্রে গাঁথা?

মৌলবাদঃ মৌলবাদ শব্দটি বাংলা দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত হয়েছে। যার একটি মৌল- যার অর্থ মৌলিক (basic),

ভিত্তিগত (foundational)মূলগত (root), আমূল, মূলআসলআদিপ্রাথমিকআদিম, মূলজাত, (primeval), ক্ষারিক alkaline,  জরায়ূ (womb), গর্ভ ইত্যাদি এবং অপরটি ‘বাদ’ যার অর্থ ধর্ম, মত (ism), তত্ত্ব, মতবাদ, ধারণা, সিদ্ধান্ত (Theory), সিদ্ধান্ত গ্রহণ (deduction), যুক্তি, তর্ক, বিচার (Argument) ইত্যাদি। সুতরাং মৌলবাদ (Fundamentalism) অর্থ মৌলিক তত্ত্ব বা প্রাথমিক মতবাদ অথবা প্রাথমিক ধর্ম যার মূল ভিতরে প্রেথিত একং যা সৃষ্টির পর থেকে  নিজের ধর্ম অক্ষুন্ন রাখে।

 


মৌলবাদ শব্দটি বিভিন্ন বিষয়, বিভিন্ন ধর্ম, সাংস্কৃতি, রাষ্ট্র, জাতি এবং পদার্থের সাথে সম্পর্কিত। যখন একটি বিষয়কে তার আদিরুপ (ভিত্তিগত) নিয়ে  অন্য আরেকটি বিষয়ের উপর প্রাধান্য দেয়া হয় তখন তাকে মৌলবাদ বলে। এখানে যাকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সে শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা, মহা-মহিম অর্জণ করেছে অর্থাৎ সে প্রথম শ্রেণির মর্যদা পেয়েছে মানে সে মৌলবাদ হয়েছে; আর যার উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সে অধস্তন (Subordinate), নিম্ন, সাধারণ ইত্যাদিতে পরিগণিত হয়েছে। এখানে যার উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে সে তার মৌলিকত্ব হারিয়েছে অথবা সে তার গুণকে পরিবর্তিত করে নিয়েছে এবং অন্যেকে নিজের উপর শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছে, সেটা হউক ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। বিভিন্ন জাতি রাষ্ট্রের মধ্যে মৌলবাদী হওয়ার চরম আকাঙ্খা বিদ্যমান।


ইতিমধ্যে অনেক রাষ্ট্র মৌলবাদী হয়ে গেছে অথবা সে কাতারে চলে গেছে। অর্থাৎ সে সুপার পাওয়ার অর্জণ করেছে, যাকে টেক্কা দেয়ার ক্ষমতা অন্য কোন জাতি রাষ্ট্রের নেই। এই পাওয়া (ক্ষমতা) সে (রাষ্ট্র) অর্জণ করেছে সামরিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং ভূ-প্রভাবগত সমীক্ষা ও সমীকরণকে কাজে লাগিয়ে। শুধু রাষ্ট্র নয় অনেক সাংস্কৃতি মৌলবাদীর পর্যায়ে চলে গেছে। বর্তমানে পশ্চিমা সাংস্কৃতির চরম জয়-জয়কার। পশ্চিমা সাংস্কৃতির আগ্রাসনের কারণে অনেক অনেক ক্ষুদ্র জাতি সত্ত্বা তাদের আদি সাংস্কৃতি হারিয়েছে, কোন কোন জাতি তাদের সাংস্কৃতিতে পশ্চিমা সাংস্কৃতির অনেক উপকরণ প্রবেশ ঘটিয়েছে। আবার কোন কোন জাতি সমূহ পশ্চিমা সাংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ করে নিজেদের মৌলিক সাংস্কৃতির আদি অংশ বিলুপ্তি ঘটাচ্ছে। সুতরাং এখানে দেখা যাচ্ছে যে সাংস্কৃতিও মৌলবাদ হতে পারে। যদি সে সাংস্কৃতি অন্য আরেকটি সাংস্কৃতির উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। এই চাপিয়ে দেয়া জোড় করে, কৌশলে, মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে, অন্য সাংস্কৃতির বদনাম ঘটিয়ে হতে পারে।


তবে ব্যাপক অর্থে মৌলবাদ বলতে ধর্মীয় মতবাদের কঠোর অনুশীলন ও ধর্ম গ্রন্থের আদি এবং আক্ষরিক বিশ্বাসকে সমর্থণ করাকে বুঝায়, বিশেষ করে মুসলমান ও প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টান সম্প্রাদায়, যারা নিজ ধর্মের মৌলিকত্ত্ব অনুশীলন এবং তা রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করতে চায়।

  

প্রগতিশীলদের কাছে মৌলবাদ অর্থ ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, গোঁড়ামি, মধ্যযুগীয় কায়দা কানুন, গুহাবাসী, অজ্ঞতা ইত্যাদি। তাদের মতে; রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম ও অন্যান্য ধর্ম এবং সাংস্কৃতির মূলোৎপাদন হলে মৌলবাদ। মৌলবাদের উদাহরণ দিতে গিয়ে তারা আফগানিস্তানের তালেবান শাসন ব্যবস্থাকে বুঝিয়ে থাকেন। তাদের কাছে মৌলবাদীর তালিকায় শুধু ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা উপরে সারিতে থাকেন। মৌলবাদের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে তারা চারু ও কারুকলা, মূর্তিপূজা, নাস্তিকতা এবং বিজ্ঞানকে টেনে আনেন। অর্থাৎ তারা মৌলবাদের বিপরীতে একক কোন টার্ম সামনে নিয়ে আসতে পারেন না। তাদের কাছে মৌলবাদের বিপরীতে একক কোন টার্ম বা মতবাদ অথবা শক্তিশালী কোন তত্ত্ব নেই। অনেকে সন্দেহ করেন এই সমস্ত প্রগতিশীল, সুশীল, বুদ্ধিজীবী এবং চেতনাবাজরা ইউরোপ, আমেরিকা এবং ভারত থেকে ভাতা পান।

 

মৌলবাদ ও ইসলামঃ মৌলবাদ হলো একটি আন্দোলন যার কর্মীরা পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদিসকে ভিত্তি ধরে নবী করীম (সা: )ও খোলাফায়ে রাশেদীন আমলে ফিরে যেতে চায়, যেখানে জীবন ও রাষ্ট্রের বিধান হবে কুরআন ও সুন্নাহ্ আর মুসলমান হবেন অমুসলিমদের জিম্মাদার। অন্য কথায় মৌলবাদ হলো- সেই সকল মূল তত্ত্ব যা মুসলমানরা আদি ও প্রকৃত অবস্থায় পালন করে থাকেন। সুতরাং পরিপূর্ণ ইসলাম হলো একটি মৌলবাদী ধর্ম এবং আল কুরআন হলো মৌলবাদী গ্রন্থ। যার মূল নবী আদম থেকে শুরু হয়েছে এবং যা শেষ হয়েছে হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর মাধ্যমে। ব্যাপক অর্থে যারা প্রকৃত মুসলমান (মুমিন) তারা পূর্ণাঙ্গ মৌলবাদী।


যখন একজন মুসলমান, যিনি ধর্মের পূর্ণাঙ্গ মৌলিক বিধান পালন করেন এবং সমাজে বা রাষ্ট্রে তা বাস্তবায়ন করার জন্য কথা বলেন তারা, আন্দোলন করেন, প্রচার প্রচারনা চালান, দল প্রতিষ্ঠান করার জন্য সংগ্রাম করেন তারা মৌলবাদী হিসেবে গণ্য হবেন। কারণ মৌলবাদী বলতেই আদি ধর্ম পালন করারকে বুঝায়। সুতরাং যে সমস্ত মুসলমানদেরকে মৌলবাদী বললে উত্তেজিত হবেন তারা প্রকৃত মুসলমান থেকে গাফেল হয়ে গেছেন।

 

 

মৌলবাদ সম্পর্কে কুরআন ও হাদিস কি বলে? মৌলবাদের সরাসরি আভিধানিক শব্দ পবিত্র কুরআন ও হাদিসে নেই। তবে মৌলবাদের পরিবর্তে, তাওহীদ, একত্ববাদ, বিশ্বাসী, মুমিন, মুত্তাকিন শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন সুরা–২ বাকারা, আয়াতে বলা হয়েছে-‘আলিফ লাম মিম! এটাই সেই মহাগ্রন্থ, যাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ অবশিষ্ট নেই, এটি মুত্তাকিনদের জন্য পরিচালক নির্দেশিকা।” 


ইসলামে মৌলবাদের আলাদা কোন টার্ম নেই। তাওহীদ, ইমান, আমল এবং অনুগত্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা পরিস্কার ও সরাসরি বলা হয়েছে। ইসলাম আবর্তিত হয়েছে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জণের জন্য, এবং তাকে ঘিরেই মুত্তাকিনদের জীবন পরিচালিত হবে। ইসলাম ধর্মের অনুসরারী তাদের কাজ কর্ম, জীবন যাপন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি একমাত্র ইসলাম থেকেই গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে তাদের পথ নির্দেশিকা হবে পবিত্র কুরআন এবং নবীর সুন্নত। অর্থাৎ আল্লাহর কাছে ইসলামী আইন ব্যতীত অন্য কোন আইন, বিশ্বাস, তত্ত্ব, থিওরী এবং সংবিধান গ্রহণযোগ্য নয়। এসম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন; ‘সাবধান! একমাত্র বিশুদ্ধ ধর্মকর্মই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য।’ (সুরা-৩৯ জুমার, আয়াত: ৩)। এখানে বিশুদ্ধ ধর্ম বলতে ইসলাম এবং কর্ম বলতে নবী মুহাম্মদ (সা:) এর বাস্তব জীবনকে নির্দেশ কর হয়েছে।

 

ইসলামে সত্যিকারের মৌলবাদী হওয়ার বিভিন্ন ফরমান স্বয়ং আল্লাহ ও রাসূল থেকে জারি করা হয়েছে। এখানে মৌলবাদ বলতে তাওহীদ, মুমিন অথবা বিশ্বাসীকে বুঝানো হয়েছে। ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠান করার জন্য স্বয়ং প্রবর্তক (নবী মুহাম্মদ সা:) পুত্তলিক (মূর্তি পূজারী), খ্রিস্টান ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবর্তীণ হয়েছেন। তাছাড়া আল্লাহ তাআয়ালা মৌলবাদী কাজকর্ম করার জন্য উৎসাহ ও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন; যেমন- “আর যারা বিশ্বাসী হয়েছে, জন্মভূতি থেকে পলায়ন (হিজরত) করেছে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে এবং যারা আশ্রয় দিয়েছে ও সাহায্য করেছে, তারাই প্রকৃত মুমিন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও উত্তম রিযিজ” (সূরা আনফাল : আয়াত ৭৪)।


ইসলাম ধর্মের মূল থেকে বিভিন্ন অনুসারী সৃষ্টি হয়েছে; যেমন হানিফি, খারিজি, রাফিঈ, সুন্নী, শিয়া, তরিকাপন্থী, মারেফাত ইত্যাদি। এই অনুসারীরা আবার বিভিন্ন মতবাদ নিজেদের মধ্যে প্রচলন করেছে। এই মতবাদ সৃষ্টি হয়েছে কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যার তারতম্যের কারণে। প্রত্যেক দল আবার নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিজেদের মতো করে নতুন নতুন মতোবাদ সৃষ্টি করেছে। অতঃপর তারা নিজেদেরকে সঠিক বলে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালিয়েছে। ইসলামের মূল ভিত্তি থেকে বিভিন্ন মতমতের উৎপত্তি  সম্পর্কে স্বয়ং নবী অগ্রিম অবগত ছিলেন; তাইতো তিনি বলেছেন; “নিশ্চয়ই আমার উম্মতের উপরে এমন অবস্থা আসবে, যেমন এসেছিল বনু ইস্রাঈলের উপরে এক জোড়া জুতার পরস্পরের সমান হওয়ার ন্যায়। এমনকি তাদের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে, যে তার মায়ের সাথে প্রকাশ্যে যেনা করেছে, তাহ’লে আমার উম্মতের মধ্যে তেমন লোকও পাওয়া যাবে যে এমন কাজ করবে। আর বনু ইস্রাঈল ৭২ ফের্কায় বিভক্ত হয়েছিল, আমার উম্মত ৭৩ ফের্কায় বিভক্ত হবে। সবাই জাহান্নামে যাবে, একটি দল ব্যতীত। তারা বললেন, সেটি কোন দল হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, যারা আমি ও আমার ছাহাবীগণ যার উপরে আছি, তার উপরে টিকে থাকবে’। উপরোক্ত হাদিসটি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

 

অতঃপর আহমাদ ও আবুদাঊদ হযরত মু‘আবিয়া (রাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন যে, ৭২ দল জাহান্নামী হবে ও একটি দল জান্নাতী হবে। আর তারা হ’ল- আল-জামা‘আত। আর আমার উম্মতের মধ্যে সত্বর এমন একদল লোক বের হবে, যাদের মধ্যে প্রবৃত্তি পরায়ণতা এমনভাবে প্রবহমাণ হবে, যেভাবে কুকুরের বিষ আক্রান্ত ব্যক্তির সারা দেহে সঞ্চারিত হয়। কোন একটি শিরা বা জোড়া বাকী থাকে না যেখানে উক্ত বিষ প্রবেশ করে না। 


সুতরাং উপরোক্ত হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে মুসলমানদের মধ্যে ৭৪টি দল সৃষ্টি হবে যারা একে অপর থেকে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ (সঠিক) বলে ঘোষণা করবে। এখানে সঠিক ঘোষণাকারী  ৭৪ দলের সবাই মৌলবাদী অর্থাৎ মৌলবাদীর সাব অর্ডিনেট মৌলবাদ। কেননা তারা নিজেদেরকে সঠিক বলে পরিচয় দিচ্ছেন এবং সবার উপরে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করছেন। অপর দিকে স্বয়ং নবী মুহাম্মদ (সা:) একটি দলকে সঠিক বলেছেন অর্থাৎ একটি দল মৌলবাদী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন, আর বাকি ৭৩টি দল হবে দ্বিতীয় সারির বা অধস্তন (Subordinate।

 

পবিত্র কুরআনে মৌলবাদীর (মুমিনের)বৈশিষ্ট প্রকাশ করতে গিয়ে স্বয়ং আল্লাহ্  বলেন: “প্রকৃত মুমিন তারাই, যারা আল্লাহও তাঁর রাসূলের ওপর ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করেনি, আর নিজেদের সম্পদ ও নিজেদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, এরাই সত্যনিষ্ঠ। (সূরা হুযরাত : আয়াত ১৫)।”  সূত্র

মৌলবাদ শব্দটি কি আধুনিক প্রয়োগঃ না মৌলবাদ শব্দটি অতি প্রাচীন। প্রাচীন কাল থেকেই মৌলবাদের সাথে মানুষ বিভিন্ন ভাবে জড়িত। গুহাবাসী থেকে মানুষ যখন সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস শুরু করল তখল একটি সমাজ বা গোত্র অন্য গোত্রের উপর প্রাধান্য দেয়ার জন্য আক্রমন, লুন্ঠন অধিবাসীদের জানমাল ক্ষতি করা শুরু করল। এক্ষেত্রে তারা বেছে নিয়েছে যুদ্ধ বা রক্তক্ষয়ী আক্রমণ। এই আক্রমনে পরিজিত গোত্রের পুরুষদের হত্যা, নারী ও শিশুদেরকে বন্ধি করা হতে। সুতরাং এখানে আক্রমনকারী গোত্র মৌলবাদে বিশ্বাসী ছিলো; যারা ভাবত নিজেদের বিশ্বাস, মর্যাদা, ক্ষমতা এক ও অক্ষুন্ন এবং যাদের সার্বভৌমত্ত্ব সবার উপরে। তাদের এই মৌলবাদীত্ব অর্জণ শান্তির পথে অর্জিত হতো না। প্রাচীনকালে চীন দেশের অধিবাসীরা ভাবত তাদের দেশ স্বর্গীয়। সুতরাং এখানে এটিও একটি মৌলবাদী মতবাদ। তাছাড়া প্রাচীন যতগুলো সভ্যতার আবিস্কার হয়েছে সে সকল সভ্যতার লোকজন অন্য জাতি রাষ্ট্র থেকে নিজেদেরকে অধিক উচ্চতর এবং শ্রেষ্ঠ হিসেবে জাহির করতে সদা ব্যস্ত থাকত। আর রাজাগণ ছিলেন শৌর্য-বীর্য, ক্ষমতা, ঐশ্বর্য্য এবং রক্ষা কবচের প্রতীক। প্রাচীন ফারাও রাজাগণ ইশ্বরের পুত্র বা প্রতিনিধি ভাবতেন। ফার্সিয়ান শাসকগণ পার্শ্ববর্তী রাজ্য আক্রমণ করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছেন।

মৌলবাদ কি আধুনিক জীবন ব্যবস্থার সাথে সাংঘার্ষিকঃ মৌলবাদ আধুনিক জীবন ব্যবস্থার সাথে সাংঘার্ষিক নয়। অনেক আধুনিক রাষ্ট্র মৌলবাদী মনোভাব পোষণ করে থাকেন। এমনকি তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নত ইস্রায়েল চরম মৌলবাদী রাষ্ট্র। তারা নিজেদেরকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা ও প্রতিষ্ঠা করেছে মৌলবাদী তত্ত্বের ভিত্তিতে। ইস্রায়েলের প্রতিটি নাগরিক আধুনিক জীবন যাপন করে থাকেন। তবে মৌলবাদ তখনই সাংঘার্ষিক হবে যখন মৌলবাদী লোকজন চরমপন্থা বেছে নেয়। অন্যায়ভাবে হত্যা, ধর্ষণ, ভিন্নমত দমন এবং বিধর্মীদের যুলুম নির্যাতন ও তাদের উপর হত্যাযজ্ঞা চালায়।

1 টি মন্তব্য: