পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

চৌহদ্দি অনুযায়ী জমি বা দালান কোঠা এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির দখল বন্টননামা

বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মারা যাওয়ার পর তার অর্জিত সমত্তি বন্টন এবং বন্টন অনুযায়ী দখলনামা চুক্তি সম্পাদন করা প্রয়োজন হয়।স্থিতিঅবস্থা বজায়, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জটিলতা নিরসনে চৌহদ্দি অনুযায়ী জমি বা অবকাঠামো দখল বন্টন করা প্রয়োজন। নিম্নে জমি বা অবকাঠামোর দখল বন্টনের বিস্তারিত পদ্ধতি ও নিয়ম উল্লেখ করা হলোঃ

চিত্রঃ চৌহদ্দি অনুযায়ী জমি বা দালান কোঠা দখল বন্টননামা

যা যা জানা প্রয়োজনঃ

১। চৌহদ্দিঃ চৌহদ্দি শব্দটির অর্থ হলো চারদিক, চতুর্থপাশ্র্ব, আশেপাশে আছে এমন কিছু, চারদিকে বৈষ্টিত অবকাঠামো ইত্যাদিত। পারিভাষিক অর্থে চৌহদ্দি হলো একটি অবস্থানগত অবকাঠামো যেমন ভূমি বা জমিন, দালনা-কোঠার চারপাশে যা কিছু দৃশ্যমান আছে তাকে চৌহদ্দি।
২। মৌজাঃ মৌজা হলো সিএস জরিপে এক বা একাধিকগ্রাম বা পাড়া বা মহাল্লা একক ধরে উপজেলা বা থানা ভিত্তিক যে ভাগ করা হয়। এখানে ভাগকৃত প্রত্যেকটি একককে আলাদা আলাদা নাম্বার দেয়া। 
৩। প্রথম পক্ষঃ প্রথমপক্ষ বলতে যিনি চুক্তিপত্র দান করবেন অথবা চুক্তিপত্রে উল্লেখিত পক্ষদ্বয়ের মধ্যে যিনি প্রথম উল্লেথ থাকবেন। দ্বিতীয়পক্ষ বলেতে চুক্তিপত্রে যিনি প্রথম পক্ষের সাথে একমত হয়ে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন অথবা চুক্তিপত্রে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে যিনি দ্বিতীয় নাম্বারে নাকবেন।
৪। অবস্থানগত চতুর্থ দিকঃ যে বিষয়ে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হয়ে তার চতুর্থদিকে অবস্থিত দৃশ্যমান সবকিছুকে বুঝায়।

চৌহদ্দি অনুযায়ী জমি দখল বন্টন 

পরম করুনাময় আল্লাহর নামে শুরু করিলাম যে নিন্মে তফসিলভূক্ত জমি পাবনা জেলার পাবনা সদর উপজেলাধীন ভাড়ারা মৌজার অন্তর্ভূক্ত দখল মোতাবেক চৌহদ্দি অনুযায়ী বন্টন করা হলো।

মৌজাঃ ভাড়ারা জে.এল.নং-১৪… আরএস খতিয়ান নং-১৬.. এসএ দাগ নং-২১…, আরএস দাগ নং-১৫…, মোট জমির পরিমান ২২.০০ শতক। (আরএস নকশা মোতাবেক জমির পরিমান ২০.৫৫ শতক)।

প্রথম পক্ষঃ মোঃ সুলতানুল আউলিয়া ওরেফে দেলু পিতা মৃত জিলান মোঃ শেখ হাবিব, জমির পরিমান নকশা মোতাবেক ৫.৭৭ শতক।

দ্বিতীয় পক্ষঃ মোঃ শহীদুল্লাহ কায়সার গং,----------জমির পরিমান নকশা মোতাবেক ১৪.৭৮ শতক।


“চৌহদ্দি”
আরএস ১৫ নং দাগের চৌহদ্দি মোতাবেক পূর্ব দিকে ভাড়ারা (চিথলিয়া বটতলা) হতে দোগাছী পাকা রাস্তা, উত্তরে চক ভাড়ারা হতে চিথলিয়া পাকা রাস্তা, পশ্চিমে মনোয়ারুল ইসলাম (বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী এবং দক্ষিনে ইমান প্রমানিক গংদের আবাদি জমি।
 
প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষগণ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ সমন্বয়ে উভয় পক্ষের সম্মত্তিতে নিম্নে চৌহদ্দি অনুযায়ী জমি ভোগদখল থাকিবেন।
 
প্রথম পক্ষঃ
দক্ষিন দিকঃ দক্ষিনে ইমান প্রমানিক গংদের আবাদি জমি (আরএস ১৫৫ নং দাগের উত্তরে আইল) হতে পূর্বে পাকা রাস্তা ও পশ্চিমে মনোয়ারুল ইসলাম বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী (আরএস ১৫৪ নং দাগের পূর্বের আইল) হতে দক্ষিনে ৯৫’ ফিট।
 
পূর্ব দিকঃ আরএস ১৫ নং দাগের উত্তর পূর্ব কর্নার)  হতে পূর্বে পাকা রাস্তা বরাবর উত্তরে ২৬’ ফিট ৫ ইঞ্চি,  পশ্চিম দিক: পশ্চিমে আরএস ১৫ নং দাগের  পূর্ব দক্ষিন কর্নার হতে উত্তরের দিক বরাবর ২৬’ ফিট ৫ ইঞ্চি
 
উত্তর দিকঃ পশ্চিমে মনোয়ারুল ইসলাম (বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী (আরএস ১৫৪ নং দাগের পূর্বের আইল) হতে পূর্বের পাকা রাস্তা পর্যন্ত উত্তরে দ্বিতীয় পক্ষের জমি পূর্ব পশ্চিম লম্বালম্বি ৯৫’ ফিট চেীহদ্দী অনুযায়ী দ্বিতীয় পক্ষের জমি সংলগ্ন ভোগদখল করবেন।   
সে অনুযায়ী ৫.৭৭ শতক জমি বাঁশ ঝাড় ও মেহগুনী গাছসহ  প্রথমপক্ষ ভোগদখল করবেন।
 
 
দ্বিতীয় পক্ষগণঃ
উত্তর দিকঃ পশ্চিমে আযহারুল ইসলাম (বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী (আরএস ১৫ নং দাগের পূর্ব উত্তর কর্নার হতে উত্তরের পাকা রাস্তা বরাবর পূর্ব পাকা রাস্তা পর্যন্ত ৯০’ ফিট।
 
পূর্ব দিকঃ উত্তর পূর্ব পাকা রাস্তা কর্নার হতে দক্ষিন দিকে পাকা রাস্তা বরাবর ৬১’ ফিট ৬  ইঞ্চি,
 
পশ্চিম দিকঃ উত্তরের পাকা রাস্তা হতে  পশ্চিমে মনোয়ারুল ইসলাম (বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী (আরএস ১৫ নং দাগের পূর্বের আইল) বরাবর দক্ষিনে  ৭৯ ফিট ৬  ইঞ্চি।
 
দক্ষিন দিকঃ পশ্চিমে আযহারুল ইসলাম (বাদশা) গংদের টিন শেড পাকা বাড়ী (আরএস ১৫ নং দাগের পূর্বের আইল) হতে পূর্বের পাকা রাস্তা পর্যন্ত দক্ষিনে প্রথম পক্ষের জমি পূর্ব পশ্চিম লম্বালম্বি ৯৫’ ফিট চেীহদ্দী অনুযায়ী দ্বিতীয় পক্ষ ভোগদখল করবেন। সে অনুযায়ী ১৪.৭৮ শতক জমি বাঁশ ঝাড় ও মাটিয়ালসহ দ্বিতীয় পক্ষ ভোগদখল করবেন।
 
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমি এখানে ভূমি বা জমির চৌহদ্দি অনুযায়ী দখল বন্টন উল্লেখ করেছি। আপনার জমির পরিবর্তে ফ্ল্যাট, দালানকোঠা, অস্থায়ী বা স্থায়ী যেকোন সম্পত্তির বন্টন উক্ত নিয়ম অনুযায়ী করতে পারবেন।এখানে দুটি পক্ষ উল্লেখ করা হয়েছে। পক্ষ যদি বেশি হয় তাহলে জমি পক্ষদ্বয়ের অনুপাতে বন্টন বা ভাগ করে নিবেন।পক্ষ যদি চারজন হয় তাহলে চারভাগ করে নিবেন আর যদি আটজন হয় তাহলে আটভাগ করে নিবেন।
 

এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের সামন্য উপকারে আসে তাহলে মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন