মূলধন ব্যয় (Capital Expenditure): এটি একটি স্থায়ী সম্পদ অর্জনের উদ্দেশ্যে করা ব্যয়কে প্রতিনিধিত্ব করে যা সেখান থেকে মুনাফা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে করা হয়। যেমন- অফিস ব্যবহারের জন্য কম্পিউটার কেনার জন্য প্রদত্ত অর্থ হল মূলধন ব্যয়। অনেক সময় মেশিনের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খরচ হতে পারে। এটিও একটি মূলধন ব্যয় হবে। মূলধন ব্যয় ব্যালেন্স শীটের অংশ। মূলধন ব্যয়ের মাধ্যমে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি সম্পদ ক্রয়, ক্রয় পরবর্তী সার্ভিস বা রক্ষণা-বেক্ষণ৷ নতুন নতুন সম্পদ ক্রয়ের মাধ্যমে সময়ের সাথে সামঞ্জস্যতা বিধান (তথ্য ও প্রযুক্তি, মেশিনারি) করা হয়। এই ধরণের ব্যয়কে হিসাব বিজ্ঞানের ভাষায় ক্যাপেক্স বা CapEx ডাকা হয়। CapEx তখনই সংঘটিত হয় যখন প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন বিণিয়োগের ক্ষেত্র খুলে। এই বিনিয়োগ স্থায়ী মূলধন হতে ব্যবহারের প্রবণতা বেশি।
মূলধন ব্যয় নির্ণয়
যে কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দীর্ঘমেয়াদি উৎস থেকে সংগ্রহ করে। দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের অন্যতম উৎস হলো: দীর্ঘমেয়াদি ঋণ মূলধন, অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন, সাধারণ শেয়ার মূলধন এবং সংরক্ষিত আয় অন্যতম। একটি কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এ চারটি উৎসের মধ্যে থেকে সংগ্রহ করে। প্রতিটি উৎস থেকে অর্থ সরবরাহকারীর প্রত্যাশিত আয় এবং ঝুঁকির ধরনে ভিন্নতা থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ঋণ মূলধন সরবরাহকারীদের প্রত্যাশিত আয় এবং সাধারণ শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত
আয় কখনো সমান হয় না। যেহেতু অর্থ সরবরাহকারীদের প্রত্যাশিত আয় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূলধন খরচ হিসেবে গণ্য হয়, সেহেতু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের বিভিন্ন উৎসে মূলধন খরচের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত অর্থ সরবরাহকারীরা তাদের বিনিয়োগকে যত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করবে, তাদের প্রত্যাশিত আয়ের হারও তত বেশি হবে। মূলধন ব্যয়ের বিভিন্ন উৎস ও ব্যয় নির্ধারন
বিভিন্ন উৎসের মূলধন ব্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
ক) সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয়
একটি কোম্পানি বাজারে সাধারণ শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে মূলধনের সংস্থান করে থাকে। আবার ব্যবসায়ের নিট মুনাফার একটি অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বন্টন না করেও অর্থের সংস্থান করতে পারে। অর্থের অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত মূলধন হতে সাধারণ শেয়ার মূলধনের পার্থক্য রয়েছে। প্রথমত কোম্পানি সবসময় শেয়ার হোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে বাধ্য থাকে না। দ্বিতীয়ত, লভ্যাংশ দিলেও প্রদত্ত লভ্যাংশের পরিমাণ বা হার সবসময় সমান থাকে না। এসব কারণে সাধারণ শেয়ার মূলধনের ব্যয় নির্ধারণ অন্যান্য উৎসের ব্যয় নির্ধারণ থেকে আলাদা হয়ে থাকে। সাধারণত কোম্পানির শেয়ার মালিকরা তাদের বিনিয়োগ হতে দু’ভাবে আয় পেয়ে থাকে, যেমন: লভ্যাংশ এবং ক্রয় মূল্যেও চেয়ে অধিক মূল্যে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে। তাই শেয়ার মূলধনের ব্যয় বলতে বিনিয়োগকারীদের বা শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ এবং শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিজনিত লাভ থেকে প্রত্যাশিত আয়ের হারকে বুঝানো হয়। সাধারণ মূলধনের ব্যয় নির্ণয়ে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমত, ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত লভ্যাংশ নির্ধারণ করা অত্যন্ত কাজ কারণ লভ্যাংশ হার অগ্রাধিকার শেয়ারের মতো নির্দিষ্ট থাকে না। দ্বিতীয়ত, ভবিষ্যতে কোম্পানির আয় এবং লভ্যাংশ বৃদ্ধির হার অনুমান করা ও কঠিন কাজ। এধরনের জটিলতার জন্য সাধারণ শেয়ার মূলধনের ব্যয় নির্ধারণের একক কোনো পদ্ধতি নেই।
নিম্নে সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের সহজ দু’টি পদ্ধতি আলোচনা করা হলো:
১. শূন্য লভ্যাংশ বৃদ্ধি পদ্ধতি: এটি মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের অন্যতম সহজ পদ্ধতি। যে পদ্ধতিতে শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত লভ্যাংশ ভবিষ্যতে অপরিবর্তিত থাকে তাকে শূন্য লভ্যাংশ বৃদ্ধি পদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতি অনুযায়ী মনে করা হয় কোম্পানি বর্তমান বছরে যে লভ্যাংশ দিয়েছে, ভবিষ্যৎ বছরগুলোতেও সমপরিমাণ লভ্যাংশ দিবে। অর্থাৎ শেয়ারহোল্ডারদের প্রত্যাশিত লভ্যাংশের কোন পরিবর্তন হবে না। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানি চলতি বছরে যদি ১২% লভ্যাংশ দেয় তাহলে আগামী বছরগুলোতেও ১২% করে লভ্যাংশ দেবে বলে অনুমান করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে প্রদত্ত লভ্যাংশকে একটি নির্দিষ্ট বাট্টার হার দিয়ে ভাগ করলে সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় পাওয়া যায়।
সূত্রের সাহায্যে বিষয়টি দেখানো হলো:
সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় (KE) = D1/Po * ১০০
এখানে,
D1 = বছরের শেষে প্রত্যাশিত লভ্যাংশ
Po = সাধারণ শেয়ারের বর্তমান বাজার মুল্য
Ke = সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয়
উদাহরণ ১: বিএসসি কোম্পানি চলতি বছর প্রতি শেয়ারে ১১ টাকা হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করে যা ভবিষ্যতে অপরিবর্তিত থাকবে। কোম্পানির সাধারণ শেয়ারের বর্তমান বাজার মুল্য ১১০ টাকা। তাহলে সাধারণ শেয়ার মুলধন ব্যয় কত?
সমাধান:
আমরা জানি, সাধারণ শেযার মূলধন ব্যয় (Ke) = D1/Po * ১০০
এখানে,
বছরের শেষে প্রত্যাশিত লভ্যাংশ (D1) = ১১ টাকা
সাধারণ শেয়ারের বর্তমান মূল্য (Po) = ১১০ টাকা
সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় (Ke) = কত?
সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় (Ke) = 11/110*100= 10%
২. স্থির লভ্যাংশ বৃদ্ধি পদ্ধতি: এটি এমন একটি পদ্ধতিতে যেখানে প্রতি বছর শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ একটি নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধি পায়। বাস্তবে একটি কোম্পানির ভবিষ্যত বছরগুলোতে লভ্যাংশের পরিবর্তন হয়ে থাকে। কারণ কোম্পানিগুলো একেক বছর একেক হারে লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। স্থির হারে লভ্যাংশ বৃদ্ধি পদ্ধতি এমন একটি পদ্ধতি যাতে ধরে নেয়া হয় যে কোম্পানি প্রতিবছর সমপরিমাণ লভ্যাংশ দেয় না। এ পদ্ধতির কিছু অনুমিত শর্ত রয়েছে, যেমন-কোম্পানির লভ্যাংশ প্রতিবছর বৃদ্ধি পাবে এবং এই বৃদ্ধির হার প্রতিবছর অপরিবর্তিত থাকবে। এই মডেলের আরেকটি অনুমিত শর্ত হলো লভ্যাংশ বৃদ্ধির হার অবশ্যই প্রয়োজনীয় আয়ের হার অপেক্ষা কম হবে। উদাহরণস্বরূপ, ডিবিএইচ কোম্পানি যদি চলতি বছর ১৩ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করে এবং কোম্পানিরি অনুমিত লভ্যাংশ বৃদ্ধির হার যদি ১০% হয় তাহলে
১ বছর পর প্রত্যাশিত লভ্যাংশ হবে ১৩ (১+০.১০) = ১৪.৩০ টাকা
২ বছর পর প্রত্যাশিত লভ্যাংশ হবে ১৪.৩০ (১+০.১০) = ১৫.৭৩ টাকা
৩ বছর পর প্রত্যাশিত লভ্যাংশ হবে ১৫.৭৩ (১+০.১০) = ১৭.৩০ টাকা
এভাবে প্রতিবছর প্রত্যাশিত লভ্যাংশ ১০% হারে বৃদ্ধি পাবে
নিচের সূত্রের সাহায্যে স্থির লভ্যাংশ বৃদ্ধি পদ্ধতি অনুযায়ী সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় নির্ণয় করা যায়, যেমন:
সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় (Ke) = D1/Po + g
এখানে D1 = বছরের শেষে প্রত্যাশিত লভ্যাংশ = Do (1+g)
g = লভ্যাংশ বৃদ্ধির হার
Po = শেয়ারের বর্তমান মুল্য
Ke = সাধারণ শেয়ার মূলধন
খ) অগ্রাধিকার শেয়ারের ব্যয়
অগ্রাধিকার শেয়ারহোল্ডারগণ সাধারণ শেয়ারহোল্ডরগণের চেয়ে কিছু অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। এরা নির্দিষ্ট
হারে লভ্যাংশ পেয়ে থাকে, যা শতকরা হার বা টাকার অংকে উল্লেখ করা হয়। অগ্রাধিকার শেয়ারের ব্যয় নির্ধারণ ঋণ
মূলধনের ব্যয় নির্ধারণ থেকে আলাদা। কারণ ঋণ মূলধন এবং অগ্রাধিকার শেয়ারের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
অগ্রাধিকার শেয়ারের লভ্যাংশ এবং শেয়ার বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থের অনুপাত নির্ণয় করলে অগ্রাধিকার শেয়ারের ব্যয় পাওয়া যায়। নিচের সূত্রের সাহায্যে অগ্রাধিকার শেয়ারের ব্যয় নির্ণয় করা যায়:
অগ্রাধিকার শেয়ারের ব্যয় = শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত লভ্যাংশ/শেয়ার বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ *100
গ) ঋণ মূলধন ব্যয়
প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এক বা একাধিক উৎস থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ মুলধন সংগ্রহ করে। উদাহরণস্বরূপ, ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান; যেমন- চায়ের দোকান, কম্পিউটার বিক্রয়ের দোকান, ঔষধের দোকান ইত্যাদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঋণ মুলধনের প্রধান উৎস হচ্ছে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, পরিবারের সদস্য, ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। আবার বৃহৎ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের পাশপাশি বন্ড বা ঋণপত্র বিক্রয় করার মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করে থাকে। ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে মুলধন সংগ্রহ করলে ঋণ মুলধন ব্যয় নির্ণয় করা খুব সহজ। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক ধার্যকৃত সুদের হার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জন্য মুলধন ব্যয় হিসেবে গণ্য হয়।
ঘ) সংরক্ষিত আয়ের ব্যয়
যে কোন কোম্পানির অর্থায়নের অন্যতম উৎস হচ্ছে সংরক্ষিত আয়। একটি কোম্পানি প্রতিবছর যে পরিমাণ মুনাফা অর্জন করে, তার সম্পূর্ণ অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বন্টন না করে যে পরিমাণ অংশ প্রতিষ্ঠানে রেখে দেয় তাকে সংরক্ষিত মুনাফা বলে। উদাহরণস্বরূপ এসিআইফরমূলা কোম্পানি লিমিটেড ২০১৬ সালে ৪০ লক্ষ টাকা মুনাফার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকা ব্যবসায়ে রেখে দিলে তা ব্যবসায়ের সংরক্ষিত আয় হিসেবে গণ্য হবে। এভাবে সংরক্ষিত আয় থেকে পরবর্তীকালে বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন করা হয়। সংরক্ষিত আয় থেকে অর্থায়ন করা হয় বলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে সংরক্ষিত আয়ের কোনো ব্যয় নেই। সংরক্ষিত আয়ের আপাতদৃষ্টিতে বাহ্যিক কোনো ব্যয় না থাকলেও এর সুযোগ ব্যয় রয়েছে।
কোম্পানির মুনাফা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বন্টন না করে রেখে দিলে শেয়ার মালিদের দৃষ্টিকোন থেকে এর একটি সুযোগ ব্যয় থাকে। অর্জিত মুনাফা কোম্পানিতে সংরক্ষিত মুনাফা হিসেবে না রেখে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বন্টন করলে তারা সেই অর্থ অন্য কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করতে পারত। কিন্তু কোম্পানি অর্জিত মুনাফা বন্টন না করলে শেয়ারহোল্ডাররা উক্ত অর্থ অন্য কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত আয় থেকে বঞ্চিত হয়। এখানে অর্থের অন্যত্র বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত আয় থেকে বঞ্চিত হওয়াটাকে সংরক্ষিত আয়ের সুযোগ ব্যয় হিসেবে গণ্য করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ডিবিএইচ লিমিটেড অর্জিত মুনাফার সম্পূর্ণ অংশ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বন্টন করলে এবং তারা সেই অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগ করে ১৩ শতাংশ হারে আয় করতে পারতো এই ১৩ শতাংশ হবে কোম্পানির সংরক্ষিত আয়ের সুযোগ-ব্যয়।
গড় মূলধনি ব্যয়ঃ
মূলধনের বিভিন্ন উৎসের ব্যয় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। যেমন সাধারন শেয়ারের ব্যয় এক ধরনের আবার ঋণ মূলধনের ব্যয় ভিন্ন ধরনের। তাহলে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কিছু ঋণ মূলধন ব্যবহার করতে পারে এবং একই সাথে কিছু অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন ব্যবহার করতে পারে, এক্ষেত্রে ব্যবসায়ের মূলধন ব্যয় হবে সবগুলোর গড়।
অনেক ভালো
উত্তরমুছুনআরো জানতে চাই
উত্তরমুছুনহুম
উত্তরমুছুন